খুলনা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও চট্টগ্রামে দশ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তাদের মধ্যে বরিশাল ও ভোলায় তিনজন করে এবং খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালীও চট্টগ্রামে একজন করে মারা গেছেন। এছাড়া, প্রলয়ংকরী এ ঘূর্ণিঝড়ের ছোবলে দেশের ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মহিববুর রহমান সোমবার (২৭ মে) বিকালে সচিবালয়ের নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এ সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রধান আবহাওয়াবিদ শামীম হাসান ভূঁইয়াসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মহিববুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালেরধ্বংসলীলায় দেশের ১৯টি জেলাক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলাগুলো হল খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালি, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও যশোর।’
ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার সংখ্যা ১০৭টি এবং ইউনিয়ন ও পৌরসভার সংখ্যা ৯১৪টি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ৩৫ হাজার ৪৮৩টি ঘর-বাড়ী সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং এক লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘরবাড়ী আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় ৯ হাজার ৪২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আট লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। গরু-মহিষ, ছাগল- ভেড়াসহ আশ্রিত পশুর সংখ্যা ৫২ হাজার ১৪৬টি।’
তিনি বলেন, ‘দূর্গত লোকজনকে চিকিৎসা সেবা দিতে এক হাজার ৪৭১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যার মধ্যে এক হাজার ৪০০ টিম চালু রয়েছে।’
মহিববুর রহমান বলেন, ‘দুর্যোগ কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ছয় কোটি ৮৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে ১৫টি জেলায় তিন কোটি ৮৫ লাখ টাকা নগদ, সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন চাল, পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশুখাদ্য কেনার জন্য দেড় কোট এবং গো খাদ্য কেনার জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সার্বক্ষনিক তদারকি করছেন। তার (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনায় ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রচেষ্টায় দেশকে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।’
শামীম হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূল অতিক্রম করলেও পেছনে বহু মেঘ রয়েছে। ফলে, বুধবার (২৮ মে) পর্যন্ত বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া অব্যাহত থাকবে। উজানে (সিলেট) ভারী বৃষ্টিপাত হবে। এখন পানি কিভাবে বাড়বে সেটাই বড় কথা।’
তিনি বলেন, সোমবার (২৭ মে) ঢাকায় ১২৫ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ১৩৮ মিলিমিটার, কক্সবাজারে ১৩৯ মিলিমিটার ও পটুয়াখালীতে ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।’
শামীম বলেন, ‘বুধবার (২৯ মে) থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল স্থল নিম্নচাপে রূপ নেবে ও সিলেটের দিকে চলে যাবে।’