বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’: কক্সবাজারে ৩৮ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২৬, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

কক্সবাজার, কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজার জেলায় ৩৮ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলার নয়টি উপজেলার ৭০টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় অন্তত চার লাখ ৮০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি তান্ডব হয়েছে বিদ্যুৎ লাইনের উপর। ছিন্ন-ভিন্ন বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার কারণে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত কক্সবাজার পৌরসভাসহ জেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে, বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা নাগাদ পুরো জেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু সম্ভব হবে।

কক্সবাজার জেলার প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সর্বশেষ তালিকায় কক্সবাজার জেলায় পাঁচ হাজার ১০৫টি কাঁচাঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২ হাজার ৭৪৯টি ঘর। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন ৩৩ কেভি লাইনের ১৭৪টি, ১১ কেভি লাইনের ১৮০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। ২৩টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে। ৪৯৬টি স্পটে তার ছিড়ে গেছে। এক হাজার ৮৩৮টি মিটার নষ্ট হয়েছে। ৮০০টি স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। পিডিবি ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন কক্সবাজার পৌরসভা, কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলার অনেক এলাকা এখনো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ফলে, ওই উপজেলাগুলোর সাথে মোবাইল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

জেলার প্রশাসক জানান, চকরিয়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত একটি ব্রিজ সম্পূর্ণ বেঁকে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি জানান, জেলায় হাজার হাজার গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ দিকে, বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল থেকে জেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কিন্তু, ফোন কল ইনকামিং, আউটগোয়িংয়ের ক্ষেত্রে জটিলতা পুরো কাঠেনি। একই অবস্থা ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত আটটা থেকে মোবাইল ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের গণি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে উপড়ে গেছে অসংখ্য বৈদ্যুতিক খুঁটি। তার ছিঁড়ে রাস্তা-ঘাট ও বসতিতে পড়ে রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা দিন রাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে, বেশীর ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া সম্ভব হয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজার পৌরসভায় অধিক ক্ষতিগ্রস্ত বিবেচনায় ১৫০ পরিবারকে এক বান্ডেল করে টিন ও নগদ এক হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে। বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকাল পাঁচটার দিকে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত মাঠে এসব টিন ও টাকা বিতরণ করা হয়।

টিন ও নগদ অর্থ বিতরণকালে মুহম্মদ শাহীন ইমরান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ, সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া, পৌরসভার প্যানেল মেয়র সালাউদ্দিন সেতু উপস্থিত ছিলেন।