শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

শিরোনাম

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় প্রস্তুত হচ্ছে দুই হাসপাতাল

বুধবার, জুন ১১, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

 

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত মেমন হাসপাতাল-২ প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় আলাদা একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে ।

বুধবার (১১ জুন) দুপুরে নগর ভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। চট্টগ্রামে গত তিন দিনে চারজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তাই করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিআইটিআইডি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র বলেন, “আমরা সবাই মিলে করোনা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে আগের মতো এবারও সফল হতে পারবো। ইতোমধ্যে তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন—তারা কেউ বিদেশফেরত নন, বরং ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাকালে সংক্রমিত হয়ে এসেছেন বলে জানা গেছে। এ থেকেই বোঝা যায়, স্থানীয় সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।”

মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, চারটি ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরটি-পিসিআর ল্যাব থাকা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) করোনা পরীক্ষা হবে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি সার্ভিস সেন্টার চালু করা হবে। এই কেন্দ্র থেকে মানুষ করোনা রোগের বিষয়ে তথ্য জানতে পারবেন।

মেয়র আরও বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি সার্ভিস সেন্টার চালু করা হবে। যেখানে নাগরিকরা ফোন করে প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে পারবেন।

ডা. শাহাদাত বলেন, গতবারও আমরা দেখেছি, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মাস্ক, ভ্যাকসিন ও মেডিকেল কিট নিয়ে ব্যবসা করেছে। এবার আমরা কঠোর থাকবো। অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ম্যাজিস্ট্রেট দল মাঠে কাজ করবে। সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটরাও প্রয়োজন অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করবে।

সভায় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে ৮০ হাজার ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, চমেক হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য আগেই আলাদা ওয়ার্ড ছিল। পরে তা ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়। এখন তা আবার করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হবে। ওয়ার্ডটিতে করোনা রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। একসঙ্গে ৫০টি সাধারণ শয্যা ও ১০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। ইতিমধ্যে ওয়ার্ডটি সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

তিনি জানান, করোনা রোগীদের পরীক্ষার জন্য পাঁচ হাজার কিটের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তা কাল-পরশুর মধ্যে চলে আসবে। আর নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার জন্য উপজেলা পর্যায় থেকে স্বাস্থ্য সহকারীদের চমেক হাসপাতালে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্স নিয়োজিত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আকরাম হোসেন বলেন, জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ১৫টি সাধারণ শয্যা ও ৫টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা রয়েছে। আর যন্ত্রপাতির বিষয়টি দ্রুত ঠিক করা হবে।

প্রস্তুতি সভায় আরও বক্তব্য দেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক অং সুই প্রু মারমা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. ইমাম হোসেন প্রমুখ।