চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক শিশু ও এক নারীর মৃত্যু এবং নতুন ১০১ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দশ মাসের শিশুকন্যা রাজশ্রী ধর ও ৩৫ বছর বয়সী এলিনা হক সোমবার (১৭ জুলাই) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডেঙ্গু কন্ট্রোল রুম মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকালে জানিয়েছে, আনোয়ারার রাজীব ধরের কন্যা রাজশ্রী ধরকে ১৫ জুলাই ও চন্দনাইশের এলিনা হককে সোমবার (১৭ জুলাই) চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার (১৭ জুলাই) তারা দুজন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গেল জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হল।
কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার ১৮ জুলাই) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নতুন ১০১ রোগী। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৬৬ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩৫ জন। ফলে, চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৬৫ জন। এদের ৯২৩ জন সরকারি হাসপাতালে ও ৬৪২ জন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২৩০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ৩৩৫ জন।
এ দিকে, চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডেঙ্গু কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ও কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ এনতেজার ফেরদৌস জানিয়েছেন, একমাত্র এডিস ছাড়া অন্য কোন মশা ডেঙ্গু ছড়াতে পারে না।’
যে কোন জাতের মশা ডেঙ্গু রোগীকে কামড়ানো পর সুস্থ কাউকে কামড়ালে তিনিও ডেঙ্গু আক্রান্ত হবেন- সম্প্রতি চট্টগ্রামে এমন একটি জোর গুজবের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এনতেজার ফেরদৌস জানান, এডিস মশার মাঝেই একমাত্র ডেঙ্গুর ভাইরাস বেঁচে থাকে। অন্য কোন মশা ডেঙ্গু রোগীকে কামড়ালে সেটির পেটে ভাইরাস ঢুকবে ঠিকই, কিন্তু বেঁচে থাকতে পারবে না। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের গবেষণায় এ পর্যন্ত এমন তথ্যই এসেছে। গুজবে গুরুত্ব না দেয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করলেও তিনি বলেন, ‘এর অর্থ, ডেঙ্গু প্রকোপ কমে যাবে, তা কিন্তু নয়। আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, শহর-গ্রাম সর্বত্রই এখন এডিস মশার বিচরণ রয়েছে এবং এ কারণে প্রকোপও দিনদিন বাড়ছে।’
তিনি স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক প্রচারিত ডেঙ্গুর সতর্কবার্তা পুরোপুরি মেনে চলার জন্য সব স্তরের মানুষের প্রতি অনুরোধ জানান।