চট্টগ্রাম: দুরূহ এক পরীক্ষার সামনে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট জিততে ম্যাচের বাকী দুই দিনে দশ উইকেট হাতে নিয়ে আরো ৪৭১ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। ভারতের ছুঁড়ে দেয়া ৫১৩ রানের পাহাড় সমান টার্গেটে তৃতীয় দিন শেষে বিনা উইকেটে ৪২ রান করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ভারতের ৪০৪ রানের জবাবে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) ১৫০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ২৫৪ রানের লিড পায় ভারত। লিডকে সাথে নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে দুই উইকেটে ২৫৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশকে বিশাল টার্গেট দেয় ভারত।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে আট উইকেটে ১৩৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। দুই উইকেট হাতে নিয়ে ২৭১ রানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। মেহেদি হাসান মিরাজ ১৬ ও এবাদত হোসেন ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। ফলো-অন এড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেন মিরাজ ও এবাদত। ভারতের স্পিনার কুলদীপ যাদবের করা দিনের পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এবাদত। এর মাধ্যমে আট ম্যাচের ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মত ইনিংসে পঞ্চম উইকেট পূর্ণ করেন কুলদীপ। দুইটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৭ বলে ১৭ রান করেন এবাদত। নবম উইকেটে মিরাজের সাথে ৮৩ বলে ৪২ রান যোগ করেন এবাদত। এবাদত ফেরার ৪১ বল পর বিদায় নেন মিরাজ। স্পিনার অক্ষর প্যাটেলের বলে উইকেট ছেড়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পড দুইটি চার ও একটি ছক্কায় ৮২ বলে ২৫ রান করা মিরাজ। ৫৫ দশমিক পাঁচ ওভার খেলে ১৫০ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের সকালের এক ঘন্টাও টিকতে পারে নি বাংলাদেশ। ভারতের বাঁ-হাতি স্পিনার কুলদীপ ৪০ রানে পাঁচ উইকেট নেন। টেস্টে এটিই সেরা বোলিং ফিগার কুলদীপের। পেসার সিরাজ ২০ রানে তিন উইকেট নেন।
২৫৪ রানে পিছিয়ে থাকায় ফলো-অনে পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশকে ফলো-অন না করিয়ে ফের ব্যাটিংয়ে নামে টিম ইন্ডিয়া।
২৫৪ রানের লিডকে সাথে নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দারুন সূচনা পায় ভারত। দলকে ৭০ রানের জুটি এনে দেন এ ম্যাচের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ও শুভমান গিল। রাহুল-গিলের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন বাংলাদেশের পেসার খালেদ আহমেদ। শর্ট বলে পুল করে ফাইন লেগে তাইজুলের দারুন ক্যাচে আউট হন ২৩ রান করা রাহুল। রাহুলের বিদায়ের পর ভারতের লিডকে বড় করেছেন গিল ও চেতেশ্বর পূজারা। বাংলাদেশের বোলারদের উপর ছড়ি ঘুড়য়েছেন তারা। ইনজুরির কারণে এ ইনিংসে বল করেন নি এবাদত ও অধিনায়ক সাকিব। বাংলাদেশের জেনুইন তিন বোলারকে অবলীলায় সামলিয়েছেন গিল ও পূজারা। ১২ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরিও পেয়ে যান গিল। গিলকে থামিয়ে জুটি ভাঙ্গেন মিরাজ। ১৫২ বল খেলে দশটি চার ও ওটি ছক্কায় ১১০ রান করেন গিল। দ্বিতীয় উইকেটে পূজারার সাথে ১১৩ রান যোগ করে গিল। গিল যখন আউট হন তখন ৪৬ রানে ছিলেন পূজারা। এরপর কোহলির সাথে ৭৫ রানের জুটি অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ার পথে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরি তুলে নেন পূজারা। পূজারার সেঞ্চুরির পরই দুই উইকেটে ২৫৮ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। এতে ৫১৩ রানের বিশাল টার্গেট পায় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানে আউট হওয়া পূজারা এবার ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন। ১৩০ বল খেলে ১৩টি চার মারেন পূজারা। ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। এ ইনিংসে খালেদ-মিরাজ একটি করে উইকেট নেন।
৫১৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ১২ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। কোন বিপদ হতে দেন নি দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিষিক্ত জাকির হাসান। শান্ত ২৫ ও জাকির ১৭ রানে অপরাজিত আছেন। দুইজনই তিনটি করে বাউন্ডারি মারেন।