চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে দুই দিনের জেলা সাহিত্য মেলা- ২০২২ রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা একাডেমির সমন্বয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় জেলা সাহিত্য মেলা- ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। প্রধান অতিথি চট্টগ্রামের ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার প্রকাশ কান্তি চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমান।
মেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও থাকছে তিনটি সেমিনার, প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা এবং কর্মশালা। থাকছে সাহিত্যের বিভিন্ন ধরণ, ছন্দ, বানান, কবিতা, ছড়া ও বাক্য গঠন নিয়ে প্রশিক্ষণ। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, মুসলিম হাই ও নাসিরাবাদ বালক স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। জেলা পর্যায়ের সাহিত্যিকদের সৃষ্টিকর্ম জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার লক্ষ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় অনুষ্ঠিত সাহিত্য মেলার ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে যারা সাহিত্য চর্চা করেন, তাদেরকে মূল স্রোতধারায় এনে বাংলার সাহিত্যকে আরো সমৃদ্ধ করায় এ মেলার প্রধান উদ্দেশ্য। সুষ্ঠু সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে এ দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখায় বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে এ সাহিত্য মেলা। সঠিক-শুদ্ধ সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জীবনধারা অপ-সংস্কৃতি হতে মুক্তি পাবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাহবুবুল হক বলেন, ‘জেলা সাহিত্য মেলা- ২০২২ এর মাধ্যমে চট্টগ্রামের সাহিত্যের স্রোতধারার গতি আরো বেগবান হবে। এ মেলা সৃষ্টিশীলতা ও সৃজনশীলতায় অবদান রাখবে। নব্য সাহিত্যিকরা নতুন নতুন সাহিত্য সৃষ্টিতে অনেুপ্রেরণা পাবে।’
বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত মোহাম্মদ শামসুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে যে অসুস্থ সংস্কৃতির চর্চা রয়েছে, সাহিত্য মেলার ধারা অব্যাহত থাকলে তা কাটিয়ে উঠা সম্ভব।’
এএইচএম লোকমান বলেন, ‘সব সুন্দর সৃষ্টিই ইতিহাস। সংস্কৃতি হচ্ছে জীবন চর্চা ও বিশ্বাসের জায়গা। সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠে জাতি ও জাতীয়তা। তৃণমূল পর্যায়ে যারা সাহিত্য চর্চা করে তারা যাতে মূল ধারায় আসতে পারে, সেই লক্ষ্যে শেখ হাসিনা এ মেলা আয়োজনের নির্দেশনা দেন। সভ্য মানুষের জন্য সমাজ। সংগ্রামী মানুষের জন্য সমাজ। মাদকমুক্ত, জঙ্গিমুক্ত অসম্প্রদায়িক সুস্থ বাংলাদেশ গড়তে সাহিত্য মেলার বিকল্প নেই।’
আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘চট্টগ্রামের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে; যা শিগগির সকলের মাঝে বিতরণ করা হবে; যাতে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে সকলে অবগত থাকে। এ ছাড়াও, চট্টগ্রামে প্রথম বারের মত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ফ্লাওয়ার ফেস্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে; যা সংস্কৃতির উন্নয়নে অনেক ভূমিকা রাখবে।’