চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটির পাঁচলাইশ থানাধীন কাতালগঞ্জ এলাকার আহমদ মিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পার্কভিউ হাসপাতাল সংলগ্ন ‘নিজ শহর’ মৌজার অর্ন্তভূক্ত ওয়াকফ্ এস্টেটের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী গণি বেকারীর পুরনো পুকুরটি রাতের অন্ধকারে ভরাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শ্রেণি পরিবর্তন না করে প্রায় ৮০ শতক বা দুই কানির এ পুকুরটির উভয় পাড়ে প্রায় দশ শতক জায়গায় মাঠি-বালি ফেলে একটি ভূমিদস্যু গ্রুপ দখলে নিয়ে সেখানে সেমিপাকা ঘর ও কার-মাইক্রোবাসের ওয়ার্কশপ তৈরী করেছে।
গণি বেকারীর ম্যানেজার কফিল উদ্দিন প্রকাশ আনসার কফিল ও স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতায় সেখানকার কার-মাইক্রোবাস ওয়ার্কপের কর্ণধার মো. ফয়েজ মিয়া নামক এক ব্যক্তি সুযোগ বুঝে তার লোকজন দিয়ে রাতের অন্ধকারে পুকুরটির দক্ষিণাংশে ভরাট করছে। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত লকডাউন চলাকালীন গণি বেকারীর বর্তমান স্বত্বাধিকারীর ইঙ্গিতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মো. ফয়েজ মিয়া রাতারাতি পুকুরটির দক্ষিণাংশে প্রায় চার শতক জায়গা ভরাট করে সেখানে টিন দিয়ে কার-মাইক্রোবাস ওয়ার্কশপ বানিয়েছে।
কাতালগঞ্জ এলাকার ‘নিজ শহর’ মৌজার অর্ন্তভূক্ত ওয়াকফ্ এস্টেটের ৩০০ শতক বা সাড়ে সাত কানি সম্পত্তি ঐতিহ্যবাহী গণি বেকারীর স্বত্বাধিকারীর নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেখানে ৮০ শতক ও ৩০ শতক পরিমানের দুটি পুকুরও ছিল। পুকুরগুলোর বয়স প্রায় হাজার বছর। বিগত ৮/১০ বছর আগে ভূমিদস্যু চক্র পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ৩০ শতক পরিমাণের পুকুরটির অধেকাংশ ভরাট করে সেখানে সেমিপাকা ঘর তৈরি করেছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত লকডাউন চলাকালীন সেখানকার কার-মাইক্রোবাস ওয়ার্কপের কর্ণধার মো. ফয়েজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি ৮০ শতক পরিমাণের বড় পুকুরটির দক্ষিণাংশে প্রায় চার শতক জায়গা ভরাট করে টিনশেড স্থাপনা তৈরি করেছে। এর মধ্যে পুকুরটির দিকে ফের কুনজর পড়েছে ফয়েজ মিয়ার। তার ভাড়া করা লোকজন দিয়ে রাতে ও ভোরে গোপনে পুকুরটির দক্ষিণাংশে মাটি-বালি ফেলে ফের ভরাট কাজ শুরু করেছে।
এ নিয়ে জানতে চেয়ে গণি বেকারীর স্বত্বাধিকারী মো. আবদুল গণি সওদাগরের দৌহিত্র আবদুল্লাহ মো. এহতেশামের সাথে যোগাযোগ করতে গণি বেকারীতে গেলে তার এক কর্মচারী বলেন, ‘উনার ফোন নম্বর এ মুহুর্তে আমার কাছে নেই, আপনাকে ফোন করতে বলব।’
পরিবেশবাদীরা বলছেন,, ‘এক শ্রেণির ভূমিদস্যু চক্রের কারণে সিটির পুকুর ও জলাশয়গুলো রাতের অন্ধকারে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পুকুর ও জলাশয় ভরাটের প্রতিযোগিতা চলমান থাকলে ভবিষ্যতে অগ্নি দুর্ঘটনা বা বড় ধরণের ঝুঁকি রোধে সংশ্লিষ্ট বর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়বে। ভূমিদস্যুদের কবল থেকে সব পুকুর ও জলাশয় উদ্ধার করতে হবে।’
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এখন থেকে সিটি-জেলার সব পুকুর ও জলাশয় ভরাট বন্ধকল্পে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা
প্রেস বার্তা