বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫

শিরোনাম

চাঁদ দেখা গেছে, সোমবার বাংলাদেশে ঈদ

রবিবার, মার্চ ৩০, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: দেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসর চাঁদ দেখা গেছে। এতে কাল সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপিত হবে। রোববার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

এ বছর বাংলাদেশে রোজা শুরু হয়েছে ২ মার্চ। সে হিসাবে রবিবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা দেওয়ায় রোজা হয়েছে ২৯টি। এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়ালের প্রথম দিন ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করেন মুসলমানরা। তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এটি। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

এবারের ঈদে ঢাকায় কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঈদগাহ মাঠে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

এ বছর ঢাকা মহানগরীতে ১১১টি ঈদগাহে ও ১৫৭৭টি মসজিদসহ মোট ১৭৩৯টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও ঢাকার অন্যান্য স্থানে অনুষ্ঠেয় ঈদ জামাতের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সমন্বিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৯ বা ৩০ দিনে মাস হয়ে থাকে। ২৯ রমজান শেষে যদি চাঁদ দেখা যায়, তাহলে পরদিন ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপিত হয়। আর চাঁদ দেখা না গেলে ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপিত হয় ৩০ রমজান শেষে।

এর আগে শনিবার (২৯ মার্চ) সৌদি আরবসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে ঈদের চাঁদ দেখা গেছে। যে কারণে রবিবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ঈদ উদ্‌যাপিত হয়েছে।

কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার খবর বলছে, বর্তমানে বিশ্বে ১৯০ কোটি মুসলমান রয়েছেন, যা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলমান বাস করেন ইন্দোনেশিয়ায়, প্রায় ২৪ কোটি। এছাড়া পাকিস্তানে ২২ কোটি, ভারতে ২১ কোটি, বাংলাদেশে ১৫ কোটি ও নাইজিরিয়ায় ১১ কোটি মুসলমান রয়েছেন।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে ঐতিহ্যগতভাবে শাওয়ালের প্রথম তিনদিন ঈদ উদ্‌যাপিত হয়। কোনো কোনো দেশে তা আরও বেশি দিন হয়ে থাকে। এটা দেশগুলোর নিজস্ব সংস্কৃতির ওপর বেশি নির্ভর করছে।

ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন শুরু হয়। তার আগে সংক্ষিপ্ত খুতবা পরিবেশন করা হয়। ঈদের দিনগুলোতে মুসলমানরা প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যান। তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময়ে মিষ্টান্ন ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য পরিবেশন করা হয়। ইবাদত, খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দ-উৎসব—সবই থাকে ঈদ উদ্‌যাপনে।

এবার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা কাল সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেবেন।

এছাড়া, ঈদের দিন বিকাল ৪টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তিনি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলেও জানান আবুল কালাম।

আরো পড়ুন

ঢাকা: যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের নামাজ পরবর্তী বিশেষ মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং ফিলিস্তিনে নির্যাতিত মুসলিমদের ওপর আল্লাহর রহমত প্রার্থনা করা হয়। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৭টায় বায়তুল মোকাররমে প্রথম জামাত শুরু হয়। মোনাজাতের মাধ্যমে নামাজ শেষ হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। পরবর্তী সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে আরও চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মুহিববুল্লাহিল বাকী। মুকাব্বির ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান। দুই রাকাত ওয়াজির নামাজের পর খুতবা দেন ইমাম, এরপর হয় মোনাজাত। মোনাজাতে গুনাহ মাফের জন্য মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানানো হয়। মুসল্লিরা অনেকেই চোখের জলে আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়। বর্তমান সরকারের জন্য দোয়া করা হয়। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করেন মুসল্লিরা। প্রথম জামাত শেষে মুসল্লিদের একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করতে দেখা গেছে। মসজিদ চত্বরে মুসল্লিদের সেলফিতে মেতে উঠতে দেখা যায়। সারাদেশে আজ মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।