ডেস্ক নিউজ: চীনের সাথে নানা ইস্যুতে ক্রমাগত সম্পর্কের অবনতির মধ্যেই এবার একাট্টা যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগেই ওয়াশিংটনের সাথে নজিরবিহীন কৌশলগত ও সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে টোকিও। খবর রয়টার্সের।
বৈশ্বিক নানা ইস্যুতে দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। ইউক্রেন ও তাইওয়ান ইস্যু নিয়ে রীতিমত তলানিতে ঠেকেছে ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্ক। অন্য দিকে, পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে ক্রমাগত চীনা সামরিক বাহিনীর সমাবেশ ঘিরে বেইজিংয়ের সাথে বৈরী রূপ ধারণ করেছে টোকিওর সম্পর্ক। এ অবস্থায় চীনের সাথে ক্রমাগত সম্পর্কের অবনতির মধ্যে নিজেদের মধ্যকার সম্পর্কের ভিত মজবুত করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান।
এ দিকে, বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ওয়াশিংটনের সাথে নজিরবিহীন কৌশলগত ও সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে টোকিও। যেখানে শুক্রবারই (১৩ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার বৈঠক হতে যাচ্ছে। এর ঠিক আগের দিনই দুদেশের সামরিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানায় টোকিও। এর মধ্যেই শুক্রবারের (১৩ জানুয়ারি) বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে হোয়াইট হাউস।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জিন পিয়েরি বলেন, ‘যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্টের সাথে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর যে বৈঠক হতে যাচ্ছে, আশা করি, এতে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের অভূতপূর্ব উন্নতি হবে। বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি, তাইপে প্রণালিতে বেইজিংয়ের তৎপরতা, ইউক্রেন ইস্যু, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত শান্তি ও স্থিতিশীলতাবিষয়ক আলোচনা গুরুত্ব পাবে। ওকিনাওয়া দ্বীপে জাপান-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়ার বিষয়টিও সামনে আসবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পূর্ব চীন সাগরে সেনকাকু দ্বীপমালা ঘিরে জাপান ও চীনের সম্পর্ক ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করায় বেইজিংকে টেক্কা দিতে বেশি মনোযোগী ফুমিও কিশিদা সরকার।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ক্রিস জন্সটোন বলেন, ‘পূর্ব চীন সাগরে জাপান-চীন দ্বন্দ্ব ক্রমেই বাড়ছে। চীনকে রুখতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক গড়তে জাপান যে একেবারে প্রস্তুত তা প্রমাণিত। দুই সরকারপ্রধানের বৈঠকে মার্কিন ও জাপানি নীতি-কৌশলের একীভূত হওয়া এগিয়ে নেবে দুই দেশের সম্পর্ক।
শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধই নয়, চীন-তাইওয়ান আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধিসহ উত্তর কোরিয়ার অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কারণে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন জাপান। আত্মরক্ষার স্বার্থে গত ডিসেম্বরেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রতিরক্ষা খাতে নজিরবিহীন ৩২ হাজার কোটি ডলার খরচের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ করে তাক লাগিয়ে দেয় জাপান। এবার জাপানের প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে টোকিওর এ বিনিয়োগ ইস্যুতে পূর্ণ সমর্থন দিতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।