বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

চুয়েটে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে দুই দিনের পঞ্চম আন্তর্জাতিক কনফারেন্স শুরু

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেসবাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘বিজ্ঞানের হাত ধরে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণেই বাংলাদেশের উন্নয়ন তড়িৎ গতিতে সম্পন্ন হচ্ছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের অগ্রযাত্রা পদার্থবিজ্ঞানের ভূমিকা ছাড়া সম্ভব নয়। এ ধরনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের একসাথে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়। বিগত কয়েক বছরে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে। পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন একইসূত্রে গাঁথা। ফলে, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশেও আবহাওয়া-পরিবেশের উপর বিরূপ পরিবর্তন ঘটে চলেছে; যা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলছে। একইসাথে টেকসই উন্নয়ন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এটা আরো বেশি জরুরি। কারণ, আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এসব ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষকদের কাজ করতে হবে। আশার কথা, ব্লু-ইকোনমিতে বাংলাদেশের দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে এই খাতে আমাদের দেশের অগ্রগতিতে প্রত্যক্ষ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।’

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে দুই দিনের পঞ্চম বারের মত ‘টেকসই উন্নয়ন ও প্রযুক্তির জন্য পদার্থবিজ্ঞান’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অফ অনার ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সুনীল ধর। সভাপতিত্ব করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক স্বপন কুমার রায়। স্বাগত বক্তৃতা করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. আশরাফ আলী। সঞ্চালনা করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অনিমেষ চক্রবর্তী। কনফারেন্সের এবারের থিম হচ্ছে ‘উদীয়মান ভবিষ্যতের জন্য পদার্থবিজ্ঞান’।

মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘পৃথিবীর আচরণ বুঝতে পদার্থবিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। টেকসই উন্নয়নে পদার্থবিজ্ঞানের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। পদার্থবিজ্ঞান ছাড়া ইঞ্জিনিয়াররাও পূর্ণতা পায় না। এই ধরনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স থেকে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞান ও গবেষণার সর্বশেষ অগ্রগতি ও তাদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা সম্পর্কে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেমন একটা ধারণা পায়, তেমনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও তথ্যের আদান-প্রদান ঘটে। আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, এই কনফারেন্স থেকে প্রাপ্ত আইডিয়া ও গবেষণালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।’

কনফারেন্সে প্রথম দিনে পৃথক দুটি কী-নোট সেশনে প্রধান বক্তা ছিলেন ভারতের প্রফেসর তনুশ্রী সাহা দাশগুপ্ত ও প্রফেসর সুশান্ত লাহিড়ী। এছাড়া, আটটি টেকনিক্যাল সেশনে কম্পিউটেশনাল ফিজিক্স, নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স, অ্যাটমোস্ফিয়ারিক ফিজিক্স ও ন্যানো ফিজিক্স প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হবে। কনফারেন্সে চারটি কী-নোট স্পিস, ১৪টি ইনভাইটেড স্পিস ও ১৪টি টেকনিক্যাল সেশনে ১১২টি প্রবন্ধ গবেষক এবং একটি পোস্টার সেশনে ৫৭টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হচ্ছে। এবারের কনফারেন্সে বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, তুরস্ক, ভারত, জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ হতে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের কয়েক শত শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, প্রফেশনাল ও উদ্যোক্তাদের মিলনমেলা বসেছে।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসটি মিলনায়তনে কনফারেন্সের সমপানী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বিশেষ অতিথি থাকবেন চুয়েটের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মো. আব্দুর রশীদ। সভাপতিত্ব করবেন টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ার অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন কনফারেন্সের টেকনিক্যাল সেক্রেটারি অধ্যাপক এইচএমএআর মারুফ।

কনফারেন্স আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় থাকছে একিউসি গ্রুপ, ইন্টারসায়েন্স, তানিয়া, ইস্টার্ন রিফাইনারি, টেকনো-ওর্থ, পলি ক্যাবলস, এনভায়োটেক কর্পোরেশন, জে-ইস ও হাইটেক।