শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সুখী-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ

বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

মো. গনি মিয়া বাবুল: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ; যা বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহত্তম অর্জন। জননেত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১৬ মার্চ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে অবিরাম কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। সে দেশই হল এই বাংলাদেশ। আর এই দেশের স্থপতিকে হত্যা করা হল ১৫ আগস্ট’ ৭৫-এ। স্বাধীনতা বিরোধীচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মৃত্যুঞ্জয়ী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হচ্ছে- ভাষা আমাদের বাংলা, জাতিতে আমরা বাঙালি, ধর্মে আমরা নিরপেক্ষ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ। নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত করে গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল- এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতী তথা শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের উন্নতি। তাদের ভাত, কাপড়, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের গ্যারান্টিসহ বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। শান্তি, স্বস্তি, শৃঙ্খলা ও জান-মালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা তথা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। সব নাগরিকের জন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বাঙালির নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির আলোকে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধুর উপরি ওই আদর্শ-লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর ডাকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায়। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে মহত্তম ও গৌরবময় ঘটনা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু, পরিতাপের বিষয় ১৯৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ দিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল ভূলণ্ঠিত। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা ও কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ১৯৭৫ সালে পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় বেঁচে যান। পরবর্তী তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছয় বছর ভারতে অবস্থান করেন।

১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে অবশেষে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার পরপরই তিনি শাসকগোষ্ঠির রোষানলে পড়েন। তাকে বার বার কারান্তরীণ করা হয়। তাকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯ বার সশস্ত্র হামলা করা হয়।

১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সামরিক সরকার তাকে আটক করে ১৫ দিন অন্তরীণ রাখে। ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারি ও নভেম্বর মাসে তাকে দুই বার গৃহবন্দী করা হয়। ১৯৮৫ সালের ২ মার্চ তাঁকে আটক করে প্রায় তিন মাস গৃহবন্দী করে রাখা হয়। ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে তিনি ১৫ দিন গৃহবন্দী ছিলেন। ১৯৮৭ সালে ১১ নভেম্বর তাকে গ্রেফতার করে এক মাস অন্তরীণ রাখা হয়। ১৯৮৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা গ্রেফতার হয়ে গৃহবন্দী হন। ১৯৯০ সালে ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু ভবনে অন্তরীণ করা হয়।

শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে উল্লেখযোগ্য হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে তাকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলি বর্ষণ। এতে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, বাবুল ও ফাত্তাহ নিহত হন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তাকেসহ তার গাড়ি ক্রেন দিয়ে তুলে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে এরশাদ সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ ও গুলি বর্ষণ করে। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও ৩০ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী শহীদ হন। লালদিঘী ময়দানে ভাষণদানকালে তাকে লক্ষ্য করে দুই বার গুলি বর্ষণ করা হয়। জনসভা শেষে ফেরার পথে ফের তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করা হয়। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বার বার হামলা করা হয়। ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচন চলাকালে তাকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করা হয়। ১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনে তার কামরা লক্ষ্য করে অবিরাম গুলি বর্ষণ করা হয়। ২০০০ সালে কোটালীপাড়ায় হেলিপ্যাডে ও শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে ৭৬ কেজি ও ৮৪ কেজি ওজনের দুটি বোমা পুতে রাখা হয়। শেখ হাসিনা পৌঁছার পূর্বেই বোমাগুলো সনাক্ত হওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। বিএনপি সরকারের সময় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ঐ দিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এক জনসভায় বক্তব্য শেষ করার পরপরই তাকে লক্ষ্য করে এক ডজনেরও বেশি আর্জেস গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। লোমহর্ষক সেই হামলায় শেখ হাসিনা প্রাণে রক্ষা পেলেও আইভি রহমানসহ তার দলের ২৪ নেতা-কর্মী নিহত হন ও ৫০০ এর বেশি মানুষ আহত হন। শেখ হাসিনা নিজেও কানে আঘাত পান।
২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে গ্রেফতার করে সংসদ ভবন চত্বরে সাবজেলে পাঠায়। প্রায় এক বছর পর ২০০৮ সালের ১১ জুন তিনি মুক্তিলাভ করেন।

শত বাধা-বিপত্তি ও হত্যার হুমকিসহ নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা ভাত-ভোট ও সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ অর্জন করেছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা। বাংলাদেশ পেয়েছে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা। শেখ হাসিনার অপরিসীম আত্মত্যাগের ফলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।

১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো ছিল ভারতের সাথে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ ও খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। এছাড়া, তিনি কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি ও ভূমিহীন, দুস্থ মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু করেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দুস্থ মহিলা ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বয়স্কদের জন্য শান্তি নিবাস, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প ও একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে একাধারে প্রায় ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলির মধ্যে রয়েছে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ, আট দশমিক ২০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন, আট কোটি মানুষকে নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উন্নীতকরণ, ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে সামুদ্রিক জলসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি, ভারতের সাথে স্থলসীমা (ছিটমহল) সমস্যা সমাধান, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, কৃষকদের জন্য কৃষিকার্ড ও দশ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলা, বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের ঋণ প্রদান, চিকিৎসা সেবার জন্য সারা দেশে প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন, দারিদে্র্যর হার ৩৮ দশমিকি চার থেকে ২১ দশমিক তিন শতাংশে হ্রাস, পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল নির্মাণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলির টার্নেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন ওড়ালসেতু নির্মাণ, প্রায় সব মহাসড়কগুলো চার লেনে উন্নীতকরণ, রেলপথে ব্যাপক উন্নয়ন, আকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপন, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার, পিলখানা হত্যাকান্ডের বিচার, জঙ্গী দমন ইত্যাদি।

গেল ১৫ বছরে পর্যায়ক্রমে সরকার এক একটি সমস্যার সমাধান করেই চলেছে। ২০০৯ সালে শুরুতেই সরকারকে বিপদে ফেলানোর জন্যে পিলখানা হত্যাকান্ড ঘটানো হয়। সরকারের বয়স যখন মাত্র দুই মাস, তখনই ঘটল পিলখানার বিডিআর হত্যাকান্ড। শেখ হাসিনার দক্ষতা, প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা গতিশীল নেতৃত্বে প্রতিটি সংকটে সরকার উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও যথাযথভাবে সমস্যার সমাধান করেছে। সম্প্রতি শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ত্রাস ও দূর্নীতিবিরোধী অভিযান চলছে। এই অভিযানেও সরকার সফল হবে বলে আমরা মনে করি। দেশের মানুষের মানবিক মর্যাদা, সমঅধিকার ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শেখ হাসিনা দুর্নীতিমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে সাহসী উদ্যোগ নিয়েছেন। এই উদ্যোগকে শত ভাগ সফল করতে সকলের ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা প্রয়োজন। শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে বিশ্ব নেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাকে মাদার অব হিউমিনিটি বা মানবতার মা হিসেবে উপাধি দেয়া হয়েছে। শান্তি, মানবতা ও উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় তিনি ইতোমধ্যে ৪০টি আন্তর্জাতিক মর্যাদা সম্পন্ন পুরস্কারে পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে শেখ হাসিনা দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করছেন।

সম্প্রতি চলমান মাদক, জুয়া, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি বিরোধী অভিযান তারই অংশ বিশেষ।
২০২০ সালের শুরুতেই বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী চলছে, বাংলাদেশে ওই বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার সাথে সাথেই শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা ও দক্ষ নেতৃত্বের ফলে দ্রুত প্রতিরোধ ও জনসচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি নেয়া হয়। ফলে, বিশ্বে যেখানে করোনা ভাইরাসে অর্থনৈতিক বিপর্যয়সহ মানুষের চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি ক্ষেত্রে নাজুক অবস্থা ও জনদুর্ভোগ চরমে। সেখানে শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যবস্থা সচল ছিল ও ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়েছে। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সক্ষম হয়েছে। যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্বে অল্প কয়েকটি দেশ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা দেয়া চালু করতে সক্ষম হয়েছে। অনেক উন্নত দেশ এখনও তাদের জনগণকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা সরবরাহ করতে যেখানে সফল হয়নি, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার জনগণকে করোনা প্রতিরোধে কোভিড-১৯ টিকা দিতে সফল হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পন্নোত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অল্প দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে বলে আমরা আশা করি। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ জাতিসংঘের দাপ্তরিক সব ভাষায় অনুবাদ হয়ে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে।

২০১৭ সালের ১৭ মার্চ জাতিসংঘের ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃত দিয়েছে। যা বিশ্বের সব নিপীড়িত, নির্যাতিত, নিষ্পেষিত মুক্তিকামী মানুষের মুক্তির সনদ হিসেবে কাজ করছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত আধুনিক সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে শেখ হাসিনা দক্ষতা ও প্রশংসার সাথে দিন-রাত কাজ করে আসছেন। আমরা যার যার অবস্থান থেকে স্বীয় সামর্থ অনুযায়ী শেখ হাসিনার এসব ভাল কাজে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করব। পাশাপাশি আমরা হৃদয়ে-অন্তরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শকে ধারণ করব। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করতে সফলতার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এই উন্নয়ন-অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে প্রত্যেক নাগরিককে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে স্বীয় দায়িত্ব পালন করতে হবে। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস দমনে সরকার যথেষ্ট সফল। তবে ঘাপটি মেরে বসে থাকা জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা যেন ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সেই দিকে সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে। সেই সাথে ব্যাংকিং খাতসহ সব ক্ষেত্রে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন সুনিশ্চিত করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকলকে সততা ও দেশপ্রেমের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যগুলো জাগ্রত করতে হবে। উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এখন বাংলাদেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ২০৪১ সালে মধ্যে বাংলাদেশ পৌঁছে যাবে উন্নত দেশের তালিকায়।

এই বছরের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করার জন্যে বর্তমান সরকার কাজ করছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। কিন্তু, সুষ্ঠু নির্বাচনের তথাকথিত দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির ভয় দেখানোসহ দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র চলছে।

বাংলাদেশের সদ্যবিদায়ী প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘যারা ভিসা নীতির ভয় দেখাচ্ছে, তারাই আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল।’ দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থাকতে হবে ও সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে। দেশবিরোধী অশুভ শক্তিকে মোকাবেলা করে শেখ হাসিনা তার দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে অব্যাহত রেখেছেন। এই উন্নয়ন-অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা ও তার মনোনীতদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা সুখী-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চয়ই প্রতিষ্ঠিত হবে জাতি তা প্রত্যাশা করে।

শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতি বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন। ২০২৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তার ৭৭তম জন্মদিন। তার জন্মদিনে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। শেখ হাসিনার জন্মদিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক, আমরা হৃদয়ে-অন্তরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শকে ধারণ করব। আমরা সততা, স্বচ্ছতা ও দেশপ্রেমের সাথে স্বীয় দায়িত্ব পালন করব।

লেখক: শিক্ষক, গবেষক, কলাম লেখক ও সংগঠক।
সভাপতি, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, ঢাকা।