/ 
প্রিন্ট করুন
ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: আগামী বছরের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পে খুব কম সংখ্যক আমেরিকানের আগ্রহ রয়েছে। যদিও গত নির্বাচনে উভয়েই বিপুল ভোট পেয়েছিলেন। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং এবিসি নিউজ পরিচালিত জরিপ বলছে, ‘এ দুইজনের একজন নির্বাচিত হলে দলীয় লোকজনও সন্তুষ্ট হবেন না। অধিকন্তু উভয় দলের কট্টর সমর্থকরাও প্রেসিডেন্ট পদে নতুন প্রার্থীর পক্ষে মত দিয়েছেন।’ রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এ জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী, ডেমক্র্যাট ও ডেমক্র্যাটিক পার্টির পক্ষে থাকা স্বতন্ত্র ভোটারের ৫৮ শতাংশ বাইডেনের বদলে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাচ্ছেন। অপর দিকে, রিপাবলিকান ও রিপাবলিকান-সমর্থক স্বতন্ত্র আমেরিকানের ৪৯ শতাংশ ট্রাম্পের বদলে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে আগ্রহী। গত সেপ্টেম্বরে একই ধরনের জরিপেও এ রকম মনোভাব পোষণ করেছিলেন উভয় দলের সমর্থকরা। ৬২ শতাংশ আমেরিকান অখুশী অথবা ক্ষুব্ধ হবেন যদি বাইডেন ফের নির্বাচিত হন। ট্রাম্পের ক্ষেত্রে এ হার ৫৬ শতাংশ।
জরিপ অনুযায়ী ৩৬ শতাংশ বলেছেন যে, ‘বাইডেন ফের নির্বাচিত হলে তারা উল্লাস করবেন বা সন্তুষ্ট হবেন। ৪৩ শতাংশ এমন মনোভাব পোষণ করেছেন ট্রাম্প বিজয়ী হলে। ৩৬ শতাংশ বলেছেন যে, ট্রাম্প নির্বাচিত হলে তারা ক্ষুব্ধ হবেন। বাইডেনের ক্ষেত্রে এমন মনোভাব পোষণ করেছেন ৩০ শতাংম। ট্রাম্প বিজয়ী হলে খুব খুশী হবেন ১৭ শতাংশ। অপর পক্ষে বাইডেন বিজয়ী হলে খুব খুশী হবেন মাত্র সাত শতাংশ।
তালিকাভুক্ত ভোটারের মধ্যে পরিচালিত এ জরিপে দেখা গেছে, আজই যদি নির্বাচন হয়, তাহলে ট্রাম্পকে ভোট দেবেন ৪৮ শতাংশ। বাইডেনের ক্ষেত্রে এ হার ৪৫ শতাংশ। ডেমক্র্যাট ও রিপাবলিকান পার্টির ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত প্রতি দশ জনের নয় জনই বাইডেন ও ট্রাম্পকে সমর্থনের কথা বলেছেন। স্বতন্ত্র ভোটারের ৫০ শতাংম ট্রাম্প ও ৪১ শতাংম বাইডেনকে ভোটি দেয়ার কথা বলেছেন।
বলে রাখা ভাল, ২০১৪ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্প মাঠে নামলেও রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত জো বাইডেন সে ঘোষণা দেন নি। তবে নানা আলোচনায় বাইডেনই দলীয় প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে ও তিনি প্রার্থী হলে তাকে চ্যালেঞ্জ দেয়ার মত কারো নাম এখন পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে না।
অপর দিকে, ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে অন্তত দশজন শিগগিরই মাঠে নামবেন বলে গণ মাধ্যমে সংবাদ এসেছে। তবে সর্বশেষ এ জরিপে বাইডেনের প্রার্থীতা নিয়ে দলীয় ফোরামে কিছুটা হলেও নড়বড়ে অবস্থা দৃশ্যমান হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কংগ্রেসের উভয়কক্ষের যৌথ সমাবেশে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ দেবেন।
সে আলোকে জরিপে দেখা যায় যে, বাইডেনের কার্যক্রমকে ৪২ শতাংশ সমর্থন দিয়েছেন। অপর দিকে, বাইডেনের প্রশাসনিক দক্ষতায় দুর্বলতার কথা বলেছেন ৫৩ শতাংম। বাইডেনের অর্থণৈতিক কর্মকান্ডের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন ৩৭ শতাংম। ব্যর্থতার কথা বলেছেন ৫৮ শতাংম। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাইডেনের গৃহিত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন মাত্র ৩৮ শতাংম আমেরিকান। ইউএস-মেক্সিকো সীমান্ত পরিস্থিতি তথা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ঠেকাতে বাইডেনের কর্মকান্ডে ৫৯ শতাংশ আমেরিকানই অসন্তুষ্ট। মাত্র ২৮ শতাংম বলেছেন যে, ‘অভিবাসন-ব্যবস্থায় বাইডেন সঠিক পদক্ষেপই নিয়েছেন।’
গোপন নথিপত্র উদ্ধার-পরবর্তী পরিস্থিতির আলোকে ৭৯ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন যে, ‘ট্রাম্প অন্যায় করেছেন।’ বাইডেনের ক্ষেত্রে এমন মনোভাব পোষণকারীর হার হচ্ছে মাত্র পাঁচ শতাংশ। তবে রিপাবলিকান পার্টির সমর্থকের ৪৯ শতাংশ বলেছেন যে,‘ বাইডেন অন্যায় করেছেন।’ ট্রাম্পের ক্ষেত্রে এমন মনোভাব পোষণ করেছেন ১৬ শতাংশ রিপাবলিকান।
