চট্টগ্রাম: ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’কে সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত জানা গেছে, জাহাজটি এখনো উপকূল থেকে প্রায় ২৭৫ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে ও সোমালিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তবে, ২৩ নাবিকের সাথে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর পূর্বে জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিকউল্লাহ খান একাধিক বার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছেন। জানিয়েছেন সেখানের সর্বশেষ পরিস্থিতি।
এ দিকে, জাহাজে জিম্মি হওয়া কয়েকজন নাবিকের পরিবারের সদস্যরা বুধবার (১৩ মার্চ) সকাল থেকে জাহাজ মালিকের প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের গোসাইডাঙ্গাস্থ কেএসআরএমের অফিসে জড়ো হয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ এবং জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারের জন্য দ্রুত পদক্ষপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ সময় জিম্মি নাবিক আব্দুর রশিদ ও আতিকুল্লাহর স্ত্রী-সন্তানরা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিমের সাথে দেখা করে তাদের উৎকণ্ঠার কথা জানান। এ সময় তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর জাহাজটির গতি ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটার ছিল। কিন্তু, রাত ১১টায় জাহাজটি ট্র্যাকিং অর্থাৎ নজরদারির বাইরে চলে যায়। জাহাজের ২৩ বাংলাদেশি নাবিকের নিরাপত্তা শঙ্কার মধ্যে পড়েছে।
কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি পুরোপুরি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে কোম্পানির কাছে বার্তা পাঠানো হয়। এছাড়া, নাবিকদের একাধিক অডিও বার্তায় অস্ত্রসহ জলস্যুদের জাহাজ দখলের কথা জানা যায়।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন এনাম বলেন, ‘জাহাজে থাকা নাবিকদের সাথে সর্বশেষ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কথা হয়েছে। তারা সকলে সুস্থ আছেন। জলদস্যুরা নাবিকদের জাহাজের কেবিনে রেখেছেন। এরপর আর কোন কথা হয়নি।’
জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর জাহাজ থেকে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) অডিও বার্তায় মো. আতিকউল্লাহ খান মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের কাছে অবশিষ্ট খাবারের পরিমাণের উল্লেখ করে জানান, তাদের জাহাজে ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি ও ২০ থেকে ২৫ দিন খাওয়া যাবে এ পরিমাণ খাবার রয়েছে। দ্রুত যাতে খাবার শেষ না হয় সে জন্য অপ্রয়োজনী ব্যবহার না করতেও জাহাজের সকলকে জানানো হয়েছে।
এছাড়া, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বে সর্বশেষ স্ত্রীর কাছে পাঠানো অডিও বার্তায় জিম্মি আতিক বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। ফাইনাল কথা হচ্ছে, এখানে যদি টাকা না দেয়, আমাদের একজন একজন করে মেরে ফেলতে বলেছে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এ বার্তাটা সকলকে পৌঁছে দিও।’