/ 
প্রিন্ট করুন
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘে মঙ্গলবার (১৬ মে) প্রথম বারের মত কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবাবিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ‘কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শীর্ষক ঐতিহাসিক রেজুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এ উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে। এটি জনগণের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সেবায় সাম্য আনয়নে বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে।
মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে রেজুলেশনটি উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত। কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনস্বরূপ জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র এ রেজুলেশনটি কো-স্পন্সর করে।
আবদুল মুহিত তার বক্তব্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনে এ রেজুলেশনের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কর্তৃক এ রেজুলেশনের অনুমোদনকে ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন।
আবদুল মুহিত বলেন, ‘রেজুলেশনটির সফল বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা ও জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এ রেজুলেশনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। কারণ, এটি সদস্য দেশগুলোতে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তন ও বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুপক্ষীয় ও আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক ও দাতাদের যথাযথ কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
বলে রাখা ভাল, বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এ অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা পুরো দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার লক্ষ্যে সরকার এ পর্যন্ত পুরো দেশে পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বে ১৪ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এ স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গণে আমাদের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করবে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে রেজুলেশনটি সদস্য রাষ্ট্রের সাথে নেগোশিয়েশন করেন উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি মো. মনোয়ার হোসেন।
মিশন গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে ও এর ধারাবাহিকতায় এই রেজুলেশনটি এ বছরের শুরুর দিকে মিশন সদস্য রাষ্ট্রের বিবেচনার জন্য প্রস্তাব করে।
সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সাথে বিগত চার মাস নিবিড় আলোচনা ও নেগোশিয়েশনের পরে মঙ্গলবার প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে।
