/ 
প্রিন্ট করুন
নিলামে বিক্রি না হওয়ায় মোংলা বন্দরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা সাবেক সাংসদদের গাড়ি সরবরাহ দেশ জাপানে ফেরত যাচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এসব গাড়ি ফেরত পাঠাচ্ছে। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পানামা পতাকাবাহী লোটাস লিডার জাহাজে করে নীলফামারীর-৪ আসনের সাবেক সাংসদ সিদ্দিকুল আলমের প্রাডো ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িটি ফেরত পাঠিয়েছে এনবিআর।
আরেক সাবেক সাংসদ কক্সবাজার-১ আসনের ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের ল্যান্ড ক্রুজারও ফেরত পাঠানোর সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। মোংলা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষের কমিশনার ম. সফিউজ্জামান বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মোংলা বন্দরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গত বছরের ১৭ জুলাই জাপান থেকে মোট চারটি প্রাডো ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি আমদানি করা হয়। তার মধ্যে একটি গাড়ি সরবরাহ দেশ জাপানে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং আরও একটি গাড়ি জাপানে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বাকি দুইটি গাড়িও সংশ্লিষ্ট আমদানিকাররা চাইলে ফেরত পাঠানো হবে।’
ম. সফিউজ্জামান আরও বলেন, ‘শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সাংসদদের ল্যান্ড ক্রুজার ছাড়িয়ে নিতে দিতে হবে মোটা অংকের শুল্ক। কারণ সংসদ ভেঙে দেয়ার পর শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল করে এনবিআর। তিন থেকে চারগুণ শুল্ক দিয়ে এসব গাড়ি নিতে কেউ আগ্রহ দেখায়নি। তাই, জাপানে ফেরত পাঠানো হচ্ছে এসব গাড়ি।
মোংলা কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিলে কপাল পোড়ে দ্বাদশ সংসদের সদস্যদের। আরও অনেক কিছুর মতো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়ি হাতছাড়া হয় তাদের। জাপান থেকে মোংলা বন্দরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা এসব গাড়ি ছাড়িয়ে তা ব্যবহারের সুযোগ পাননি সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, নীলফামারী-৪ আসনের সিদ্দিকুল আলম, দিনাজপুর-১ আসনের মুহাম্মদ জাকারিয়া ও সংরক্ষিত আসনের নাসিমা জামান ববি। তারা আত্মগোপনে বা বিদেশে পালিয়ে গেলে গাড়িগুলো সময়মতো ছাড় না করায় তা নিলামে তোলে মোংলা কাস্টম হাউস। তবে তাতেও সমাধান না হওয়ায় বিলাসবহুল এসব গাড়ি সরবরাহকারী দেশ জাপানে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে এনবিআর।
এর মধ্যে সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিকের গাড়ি চলতি মাসে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিমের ল্যান্ড ক্রুজারও ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে।
গত বছরের ১৭ জুলাই চারটি প্রাডো ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি জাপান থেকে মোংলা বন্দরে আমদানি করার পর সরকারের পটপরিবর্তন হওয়ায় গাড়িগুলো ফেলে যান সাবেক সাংসদরা। এরপর ২৫ নভেম্বর গাড়িগুলো নিলামে তোলে মোংলা কাস্টম হাউস। তাতেও বিক্রি হয়নি সাবেক সাংসদদের এসব শখের গাড়ি।
সূত্র বলছে, তৎকালীন সামরিক সরকার এইচএম এরশাদ সাংসদদের খুশি করতে ১৯৮৭ সালে প্রথম শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা দেন। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধানটি বাতিল করলে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বিধানটি আবার চালু করে। এতে গেল ১৫ বছরে সরকার রাজস্ব হারায় কয়েক হাজার কোটি টাকা।
