রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

শিরোনাম

জামাইকায় হুমায়ূন আহমেদ সম্মেলন ও আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা; জুয়েল আইচের যাদু

শুক্রবার, অক্টোবর ২০, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে হুমায়ূন আহমেদ সম্মেলন ও আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা গেল ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় জামাইকাস্থ ‘দ্য ম্যারি লুইস একাডেমি’তে এই মেলার আয়োজন করে শো টাইম মিউজিক। নিউইয়র্কে বসবাসরত ৫০০’র অধিকাপ্রবাসী বাংলাদেশি মেলার নানা পর্বে অংশ নেন। মেলার অন্যতম আর্কষণ ছিল জুয়েল আইচের জাদু প্রদশর্নী।

প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুন নবী, অতিথি জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, পূরবী বসু, বেলাল বেগ, ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন, জিনাত নবী, ফরহাদ হোসেন ও মাজহারুল ইসলাম সম্মেলনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মেলায় সদ্য প্রয়াত কবি আসাদ চৌধুরী স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

ছোট ছোট শিশু কিশোররাও হলুদ পোশাকে সেজেগুজে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ফারজিন রাকিবা, আইনুন নাহার রলি চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা তত্বাবধান করেন। নেলী ইসলাম, ছন্দা সুলতান ও শাহীন দিলওয়ারের সঞ্চালনায় স্বরচিত কবিতা ও ছড়ার আসর বসে। এবিএম সালেহ উদ্দিন সঞ্চালনা করেন বই পরিচিতির আসর। লেখক হুমায়ুন আহমেদ: আমার ভাল লাগা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাকসুদা আহমেদ। সহযোগিতায় ছিলেন নেলী ইসলাম। বেনজির সিকদার রচিত পুঁথি পড়েন মৃদুল আহমেদ।

রাইটার্স ক্লাবের পক্ষে বক্তৃতা করেন সদস্য সচিব খালেদ সরফুদ্দিন। হুমায়ুন সাহিত্যের সৌরভ শীর্ষক আলচনায় অংশ নেন কৌশিক আহমেদ, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও নুরুন নবী। উপস্থাপনা করেন মনজুর কাদের। শিশু কিশোদের অংশগ্রহণে ‘আমাদের প্রজন্ম আমাদের অহঙ্কার’ উপস্থাপনা করেন আবু সাইদ রতন। হুমায়ূন আহমেদের শিশুতোষ গল্প পাঠ ‘গল্পে গল্পে হুমায়ুন’ পর্বে গল্পদিদিমনি সাবিনা নিরু শিশুদের সাথে গল্পের আসর জমান। শিশুদের পুরস্কার তুলে দেন লুৎফর রহমান রিটন, জুয়েল আইচ, নুরুন নবী, কৌশিক আহমেদ ও পূরবী বসু।

আবৃত্তির অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন জিএইচ আরজু। ‘গীতিকার হুমায়ুন আহমেদ’ বিষয়ে আলোচনা করেন বেলাল বেগ। সঞ্চালনা করেন শাহ ফিরোজ। মুমু আনসারী ও নাহরীন ইসলামের যুগল কণ্ঠে ছিল ‘জাগো বাহে কুনঠে সবাই’ আবৃত্তি। ফরিদা ইয়াসমিন ও শামীম আরা বেগমের তত্বাবধানে ও মার্জিয়া স্মৃতির কোরিওগ্রাফিতে নৃত্য করে বাফার ক্ষুদে শিল্পীরা।

‘হুমায়ুন ঘনিষ্ঠদের স্মৃতিচারণ’ অনুষ্ঠান উপস্থানা করেন মাজহারুল ইসলাম। অংশ নেন জুয়েল আইচ, পুরবী বসু, লুৎফর রহমান রিটন ও ফরহাদ হোসেন। এই পর্বে জুয়েল আইচের চমৎকার কথা ও যাদুতে দর্শকরা বিমোহিত হন। গান করেন এসআই টুটুল, সেলিম চৌধুরী, কৃষ্ণা তিথি, চিত্রা রোজারিও, লিয়ানা মানহা, বাঁধ ও তাসকিনুল হক। যুগলবন্দি করেন শান্তনু সাজ্জাদ ও আইনুন নাহার রলি। মেলায় নালন্দা, রাইটার্স ক্লাব যুক্তরাষ্ট্র, সময় প্রকাশন, অন্য প্রকাশ, পঞ্চায়েত, ছড়াটে’সহ বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশ নেয়।

মেলার সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন শো টাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম ও বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের মিশুক সেলিম।

জাদুশিল্পী শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা জুয়েল আইচ তার গুরু গম্ভীর বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে শ্রোতাদের কিছুটা হালকা করার জন্য যাদু দেখাচ্ছিলেন। আলোচনার শুরুতেই হল ভর্তি মানুষকে মনস্তাত্ত্বিক বক্তৃতায় আবেগ ও সম্মেহিত করে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যান। এরপর হুমায়ূন আহমেদের সাথে দীর্ঘ স্মৃতিচারণ করেন।

জুয়েল আইচ বলেন, ‘মানুষ তার হাসির সমান সুন্দর, স্বপ্নের সমান বড়, আর তার কাজের সমান সফল। বিখ্যাত মানুষ দেখলেই সেলফোনে ছবি তোলার বদলে উল্লিখিত তিনটি অনুশীলন দ্বারা বরং নিজেই বিখ্যাত হওয়ার দিকে আমাদের সবাইকে মনোনিবেশ করতে হবে।’

জুয়েল আইচ হুমায়ূনের ১৪ লাউ ও রশি লাগানো সাত বোতল ওয়াইনের গল্পও শোনালেন। তুলে ধরলেন, ৪২ ধরনে মাছ দিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ কিংবা ডিনার করানোর স্মৃতি। একটি দেয়ালের ব্যবধানে তাদের বাস হলেও বেলকুনিতে নানা খুনশুটির গল্পের শেষ নেই। এমনই নানা স্মৃতিচারণ নিয়ে জুয়েল আইচ ঘন্টাব্যাপী হুমায়ুনের কথা বলছিলেন।