শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ট্রাম্পের নয়া ঘোষণা: বাণিজ্য যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র?

বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

যুক্তরাষ্ট্র/ভারত: ‘বন্ধু’ মোদিকেও ছাড় দিচ্ছেন না যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও খাঁটি ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি কমিয়ে আনতে চান ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি। তাই, দেশটির উচ্চ শুল্কের বিপরীতে ঘোষণা দিয়েছেন পাল্টা শুল্ক আরোপের। এতে, চীনের পর ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কা দেখছেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্বের যে কজন নেতার সঙ্গে ট্রাম্পের ‘সুসম্পর্ক’ রয়েছে বলে মনে করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে, মৌখিক বন্ধুত্বের কোন ছাপ বাণিজ্য সম্পর্কে রাখছেন না জানুয়ারিতে দায়িত্ব নিতে যাওয়া এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানিতে ভারতের উচ্চ শুল্ক আরোপের কঠোর সমালোচনা করে, এবার ভারতীয় পণ্য আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলেন তিনি। এতে, চীনের পর আরেকটি বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কা দেখছেন বিশ্লেষকরা।

বেশ কিছু মার্কিন পণ্য আমদানিতে চড়া শুল্ক আরোপ করে রেখেছে ভারত। চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘উচ্চ শুল্কের মাধ্যমেই ভারতকে জবাব দেয়া হবে। এই তালিকায় আছে ব্রাজিলও।’

ট্রাম্প টাওয়ার অধিপতি বলেন, ‘পণ্য আমদানিতে ওই দেশগুলোর সমপরিমাণ শুল্কারোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।’

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যদি কোন দেশ আমাদের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও সেই দেশের পণ্যের ওপর চড়া হারে কর চাপাবে। ওরা (ভারত) প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমাদের ওপর অধিক কর চাপায়। অথচ এত দিন আমরা ওদের ওপর কোন কর চাপাইনি।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘বাণিজ্যে স্বচ্ছতা থাকতে হবে। ভারত যদি মার্কিন পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও সেই পরিমাণ শুল্ক চাপাবে। ওরা আমাদের ওপর শুল্ক চাপালে সমস্যা নেই, কিন্তু সেক্ষেত্রে আমরাও পাল্টা শুল্ক চাপিয়ে দেব।’

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন হলেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুখকর ছিল না। ২০১৯ সালে ভারতের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিশোধ হিসেবে, কয়েকটি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করে ভারত। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি হারায় দেশটি।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদেও একই ধরনের বাণিজ্য টানাপোড়েনের শঙ্কা দেখছেন বিশ্লেষকরা। সাম্প্রতিক ঘোষণা সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ ও টেক্সটাইল শিল্প।

ভারতের অন্যতম রফতানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে গেল অর্থ বছরে রফতানির পরিমাণ ছিল ৭৭ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার। বিপরীতে ভারত আমদানি করেছে ৪২ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে আছে যুক্তরাষ্ট্র।