বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ট্রাম্পের প্যারিস চুক্তি থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতির মধ্যে কপ-২৯ সম্মেলন শুরু

সোমবার, নভেম্বর ১১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

বাকু, আজারবাইজান: আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সোমবার (১১ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের জলবায়ু বিষয়ক কপ-২৯ সম্মেলন। এ দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কার্বন নির্গমনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সংবাদ এএফপির।

জলবায়ু তহবিল নিয়ে বিতর্কিত বিতর্কে, ২০২৪ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙার পথে রয়েছে- এমন নয়া সতর্কবাণীর পর দেশগুলো জলবায়ু কূটনীতির প্রধান জাতিসংঘ ফোরামে যোগ দিতে বাকুতে আসে। কিন্তু, আলোচনায় ট্রাম্পের ফিরে আসা নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করবে- এমন আশঙ্কায় বৈশ্বিক উষ্ণতা সীমিত করার জন্য আলোচনার টেবিলের চারপাশে কম উচ্চাকাঙ্ক্ষা হতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিষয়ক ভানুয়াতুর বিশেষ দূত রালফ রেগেনভানু বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে বৈশ্বিক পদক্ষেপের গতিকে লাইনচ্যুত হতে দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘এটি একটি বিভক্ত সমস্যা; যা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এমনিতেই সমাধান হবে না এবং আমরা পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম দূষণকারীর আসন্ন প্রেসিডেন্টের কাছে এই ব্যাপারটি উপস্থাপন করব।’

বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দূরে থাকছেন, যেমন বহু নেতা রয়েছেন; যারা ঐতিহ্যগতভাবে জলবায়ু সম্মেলনের শুরুতে উপস্থিত ছিলেন কার্যধারার পাল্লা ভারী করতে।

২০ গ্রুপের মাত্র কয়েকজন নেতা এবারের জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন অথচ তাদের দেশগুলো বিশ্বব্যাপী নির্গমনের প্রায় ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী।

আফগানিস্তানের তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বারের মত একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। তারা পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

কূটনীতিকরা জোর দিয়েছেন, ট্রাম্পের জয় বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু তহবিলের জন্য একটি নয়া পরিসংখ্যানে সম্মত হতে উল্লেখযোগ্য কোন বিঘ্ন ঘটবে না।

উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে তাদের অর্থনীতিকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করার জন্য আলোচকদের অবশ্যই বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে হবে।

১০০টিরও বেশি উন্নয়নশীল দেশ ও চীনের গোষ্ঠীভুক্ত একটি ব্লকের উগান্ডার চেয়ার অ্যাডোনিয়া আয়েবারে রোববার (১০ নভেম্বর) বলেছেন, ‘এটি কঠিন। এতে অর্থ জড়িত। যখন অর্থের কথা আসে, প্রত্যেকেই তাদের আসল চেহারা দেখায়।’

এই সম্মেলন চলবে ১১-২২ নভেম্বর পর্যন্ত।

ট্রাম্প বার বার জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘প্রতারণা’ বলে প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কিন্তু, অ্যাডোনিয়া আয়েবারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহারের সম্ভাব্য পরিণতিগুলোকে একপাশে সরিয়ে দিয়ে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে তার প্রথম মেয়াদে প্যারিস চুক্তি থেকে বের করে নিয়েছিলেন।

‘এটি পূর্বেও ঘটেছে, আমরা পুনর্গঠনের একটি উপায় খুঁজে বের করব।’

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলো ট্রিলিয়ন ডলারের জন্য চাপ এবং জোর দিচ্ছে যে, অর্থ বেশিরভাগই ঋণের বদলে অনুদান হওয়া উচিত।’

তারা সতর্ক করেছে, অর্থ ছাড়া তারা তাদের জলবায়ু লক্ষ্যগুলোর উচ্চাভিলাষী আপডেটগুলো অফার করতে সংগ্রাম করবে, যা দেশগুলোকে আগামী বছরের প্রথম দিকে জমা দিতে হবে।

এলডিসি ক্লাইমেট গ্রুপের চেয়ারম্যান ইভান্স নজেওয়া বলেছেন, ‘টেবিলে কিছু অর্থ আনুন যাতে আপনি আপনার নেতৃত্ব দেখাতে পারেন’। এই গ্রুপের সদস্য এক দশমিক এক বিলিয়ন লোকের বাড়ি।

তবে, উন্নত দেশগুলোর ছোট দল যারা বর্তমানে অবদান রাখে তারা চীন ও উপসাগরীয় রাজ্যগুলোসহ অন্যান্য ধনী দেশ এবং শীর্ষ নির্গমনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দাতা গোষ্টির প্রসারিত দেখতে চায়।

চীনের এক কর্মকর্তা রোববার (১০ নভেম্বর) এক রুদ্ধদ্বার অধিবেশন চলাকালীন সতর্ক করেছিলেন, আলোচনার লক্ষ্য বিদ্যমান চুক্তিগুলোকে ‘পুনরায় আলোচনা’ করা উচিত নয়।