তেহরান, ইরান: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভূমিধস জয়ে দ্বিতীয় বারের মত হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ফিরে আসা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলী খামেনির জন্য মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। সংবাদ ইরান ইন্টারন্যাশনালের।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোরাদ ভেইসি জানান, ট্রাম্পের প্রথম শাসনামলে খামেনি তার ঘনিষ্ঠ কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হারান। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকের বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হন। এ ছাড়া ইরানের তেল রপ্তানিতে ধস নামে ট্রাম্প আমলেই। একইসাথে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
চার বছর পূর্বে খামেনি প্রায় নিশ্চিত ছিলেন যে, ট্রাম্পের বিদায় তার জন্য অনেকটা স্বস্তি ছিল। কিন্তু, ট্রাম্পের রাজনৈতিকভাবে ফিরে আসা খামেনির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াল। ট্রাম্পের জয়ের প্রথম তিন দিন কার্যত চুপ ছিলেন খামেনি। খামেনি শুধু বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সব প্রেসিডেন্টই দুর্নীতিগ্রস্ত।’ তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন বা ট্রাম্পের নাম মুখে নেননি।
খামেনি হয়তো এখন বিকল্প চিন্তাভাবনা করছেন। তিনি ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরানের যুক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেবেন নাকি বৈরী অবস্থান বজায় রাখবেন।
ইরানের পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক আবদোলরেজা ফারাজি-রাদের মতে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের উচিত ঐক্যমত্য গড়ে তোলার জন্য কাজ করা ও ট্রাম্পের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা।
ফারাজি-রাদ উল্লেখ করেছেন যে, ইরান থেকে পাঠানো বার্তার সুরের ওপর ট্রাম্পের কেমন উত্তর হবে, তা অনেকটা নির্ভর করছে। ফাজারি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ট্রাম্পের সাথে যোগাযোগের উদ্দেশ্য হবে, ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং পেজেশকিয়ানের উচিৎ হবে ভারসাম্য পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে এটি করা।
মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ হামিদ আবুতালেবি জানিয়েছেন, মাসুদের উচিৎ ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানানো। তবে, মাসুদ পেজেশকিয়ান খামেনি অনুমতি ছাড়া এটি করবেন না এবং অন্য দিকে খামেনিও এমন উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করবেন।
কট্টরপন্থী ভাষ্যকার আব্বাস সালিমি নামিন অবশ্য পূর্ণ আস্থা ব্যক্ত করেছেন যে, ইরান কখনোই ট্রাম্পের সাথে আলোচনা করবে না।
খামেনি নেতৃত্বাধীন ইরান গেল ছয় বছর ধরে গভীর অর্থনৈতিক সংকটে। দেশটির মুদ্রার মানও তলানিতে। খামেনি বর্তমানে শক্তিশালী ইসরায়েলের সাথে লড়ছেন। তবে, ইরানের প্রক্সি বাহিনীগুলো বর্তমানে গাজা ও লেবাননে ধুঁকছে। তাই, ট্রাম্পের ফের প্রত্যাবর্তন খামেনির জন্য দুঃস্বপ্ন।