রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ডিএফসির অর্থায়নের মাধ্যমে আরো মার্কিন বিনিয়োগ কামনা বাংলাদেশের

শুক্রবার, আগস্ট ১৯, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন সরকারের প্রতি তাদের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (ডিএফসি) মাধ্যমে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে আরো বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইকোনমিক গ্রোথ, এনার্জি অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্ট জোসে ডব্লিউ ফার্নান্দেজের মাধ্যমে সে দেশের প্রতি এ অহবান জানান।

তৌফিক-ই-ইলাহী ও ফার্নান্দেজ বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং এটিকে আরো শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। জ্বালানি উপদেষ্টা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে স্বনির্ভর করতে শেখ হাসিনার সরকারের গৃহীত নীতির বিষয়ে আন্ডার সেক্রেটারিকে অবহিত করেন।

বাংলাদেশ সরকার কিভাবে গ্যাস, তেল ও কয়লা, পারমাণবিক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির মত বিভিন্ন উৎস থেকে জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনছে- এ বিষয়টিও তিনি তুলে ধরেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বর্তমান বৈশ্বিক জ্বালানি ঘাটতি বাংলাদেশসহ অনেক দেশকে তাদের জ্বালানি নিরাপত্তা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি পরিস্থিতির উন্নতিতে ভূমিকা রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ডিএফসির অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের মত দেশে আরো বিনিয়োগে এগিয়ে আসা উচিত।’

তিনি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য এবং বাংলাদেশে পারমাণবিক শক্তি মডুলার চুল্লির সম্ভাবনা দেখার জন্য মার্কিন কোম্পানিগুলিকে উৎসাহিত করেন।

আন্ডার সেক্রেটারি বাংলাদেশের চমৎকার আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য নিরসনে অগ্রগতির প্রশংসা করেন। ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বের দেশগুলিকে প্রভাবিত করছে, তা স্বীকার করে ফার্নান্দেজ উপদেষ্টাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য, জ্বালানি বা সারের মত প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নি।’

আন্ডার সেক্রেটারি নতুন নতুন সুযোগ ও সহযোগিতার ক্ষেত্র উন্মুক্ত করার জন্য শ্রম অধিকার ও কারখানার নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো উন্নত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে বাংলাদেশকে উৎসাহিত করেন।

তিনি ‘ক্লিন এনার্জিকে’ একটি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে অভিহিত করেন এবং বাংলাদেশের ধরনের সম্ভাবনা উন্মোচন করতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। আন্ডার সেক্রেটারি ফার্নান্দেজ ২০২১ সালের নভেম্বরে কোপ-২৬ এ চালু হওয়া ‘গ্লোবাল মিথেন প্লেজে’ যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে আহবান জানান।

উপদেষ্টা চৌধুরী ও আন্ডার সেক্রেটারি ফার্নান্দেজ বলেন, ‘বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত ও গভীর হচ্ছে ও উভয় সরকারের উচিত তাদের অভিন্ন স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’

এ দিকে, উপদেষ্টা বিকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি শিল্পের সিনিয়র নেতাদের সাথে একটি উচ্চ-পর্যায়ের গোল টেবিল বৈঠকে অংশ নেন। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল ‘বর্তমান অবস্থায় করনীয়: ইউএস- বাংলাদেশ জ্বালানি সহযোগিতা’ থিমের অধীনে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধন করা কাউন্সিলের ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স, এলএনজি আমদানি ক্ষমতা সম্প্রসারণ, দেশের উচ্চাভিলাষী গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন ও অভ্যন্তরীণ জ্বালানি অনুসন্ধান বিষয়ে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সুপারিশের অগ্রগতির সর্ম্পকে জ্বালানি উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।

তৌফিক-ই-ইলাহী বর্তমান জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় ও বাংলাদেশের মত দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির জ্বালানি চাহিদা মেটাতে স্বল্প থেকে দীর্ঘ মেয়াদী টেকসই সমাধানের জন্য সরকার যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, তা তুলে ধরেন।

এ ছাড়া মার্কিন জ্বালানি শিল্প জ্বালানি স্থানান্তরের বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো বাড়াতে কি সহায়তা করতে পারে, এ বিষয়টি আলোচনায় স্থান পায়।

ভাসমান সৌরবিদ্যুৎসহ স্টোরেজ সমস্যার সমাধান, বায়ু ও সৌরশক্তি কিভাবে জ্বালানি মিশ্রণে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে, সে বিষয়টিও বৈঠকে আলোচিত হয়।