নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: ডেমোক্রেটিক প্রাইমারি নিবার্চনে নিউিইয়র্কের কুইন্স কাউন্টি কমিটির মেম্বার পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন আবু জাফর মাহমুদ। শনিবার (২৯ জুন) উডসাইডের গুলশান টেরেসে আবু জাফর মাহমুদের নেতৃত্বধীন রাজনৈতিক সংগঠন পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস আয়োজিত সাংগঠনিক নৈশভোজে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাসেম্বলিম্যান স্টিভেন রাগা। এবার ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে স্টিভেন রাগাও নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায়।
আবু জাফর মাহমুদ প্রথম বাংলাদেশি, যিনি কুইন্স কাউন্টি মেম্বার পদে নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে চূড়ান্তভাবে প্রার্থী হলেন তিনি।
পিপল আপ’- এর ওই সাংগঠনিক নৈশভোজে কুইন্স কাউন্টির ইন্টার গর্ভমেন্টাল অ্যাফেয়ার্স ডেপুটি চিফ হারিস কে প্যারেখ, গণতান্ত্রিক সমাজবাদী ইউনিয়ন নেতা ক্লেয়ার ভ্যালডেজ উপিস্থিত ছিলেন।
পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেসের প্রেসিডেন্ট আবু জাফর মাহমুদ আয়োজনটিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সীমানা অতিক্রমের একটি আনুষ্ঠানিক অধ্যায় উল্লেখ করে বলেন, ‘যারা এত দিন বাংলাদেশি কমিউনিটিতে অবদান রেখেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা এখন দৃপ্তস্বরে, স্বগৌরবে বলতে পারবেন ডেমোক্রেটিক প্রাইমারি নিবার্চনে আমরাও মূলধারার নেতৃত্বে অংশীদার।
তিনি জানান, কুইন্স কাউন্টি কমিটির মেম্বার পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় তার জয়লাভের ব্যাপারটি একটা ইতিহাস ও একই সাথে একটি নয়া অধ্যায়ের সূচনা। এর কৃতিত্বের দাবিদার কমিউনিটির সব মানুষ।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী নিবন্ধনভুক্ত ও নিবন্ধন বহির্ভূত সব নাগরিকের পক্ষে পিপল আপ’-এর ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন আবু জাফর মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘এ এজেণ্ডা যুক্তরাষ্ট্রে নেতৃত্ব দেয়- এমন শীর্ষ দল ও ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবায়নের চেষ্টা চালানো হবে।
এজেণ্ডার মধ্যে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সব অভিবাসীর দ্রুত নাগরিকত্ব দেয়া ও ট্যাক্স প্রদানের আওতায় আনা। অভিবাসীদের জন্য মেডিকেল ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা, কম দামে অল্প আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, শিশুদের খাদ্য, প্রসাধনীর মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত ছাত্র-ছাত্রীদের শাস্তি মওকুফ করা ও শিক্ষা জীবনে ফিরিয়ে নেয়া, ছাত্র-ছাত্রীদের ফেডারেল ঋণ মওকুফ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া, আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সরকারী কোষাগার থেকে তহবিল সংস্থান করা, শিক্ষা ক্ষেত্রে- প্রশাসনে সবোর্চ্চ দেশপ্রেমের অগ্রাধিকার চর্চা নিশ্চিত করা, মুসলীম অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সর্ম্পক জোরদার করা, উবার চালক-দোকান কর্মচারীদের অধিকার আদায়, নারীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি সুসংহত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।
অনুষ্ঠানে স্টিভেন রাগা আবু জাফর মাহমুদের ১৪ দফা প্রস্তাবনাকে সময়োপযোগী উল্লেখ করে তা একসঙ্গে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদের নূন্যতম মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে একযোগে কাজ করা হবে। এ জন্য আসছে নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র নিবার্চনে তাদের জয়ী হওয়া জরুরী।’
আর এর জন্য বাংলাদেশী কমিউনিটির সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন স্টিভেন রাগা।
অনুষ্ঠান পরিচালনার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা মিলন রহমান।