রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

শিরোনাম

তৈরি পোশাক খাতের মত অন্যান্য রপ্তানি পণ্যকেও গুরুত্ব দিন

রবিবার, জানুয়ারী ২১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈদেশিক আয় বাড়াতে তৈরি পোশাকের মত পাট ও চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, তথ্য প্রযুক্তি পণ্য ও হস্তশিল্পসহ অন্যান্য রপ্তানি পণ্যে একই গুরুত্ব দিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আমাদের আরো নতুন পণ্য উৎপাদন ও নতুন বাজার (রপ্তানির জন্য) অন্বেষণে মনোযোগ দিতে হবে। আমরা বর্তমানে রপ্তানির জন্য কয়েকটি পণ্যের উপর নির্ভর করি। রপ্তানির জন্য একটি বা দুটি পণ্যের উপর নির্ভর করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। কারণ, বহু প্রতিবন্ধকতার মোকাবেলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

শেখ হাসিনা রোববার (২১ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার উপকণ্ঠে পূর্বাচল নিউ টাউনে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে মাসব্যাপী ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন ও নতুন বাজার খুঁজে বের করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরো বলেন, ‘নয়া নয়া বাজার আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, একটা বা দুইটার উপর আমাদের নির্ভরশীল থাকলে চলবে না। কারণ, বহু চড়াই উতরাই পার হয়েই আমাদের আসতে হয়। সেটা মাথায় রাখতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবার যে নির্বাচন ইশতেহার দিয়েছি, সেখানে আমরা লক্ষ্য স্থির করেছি ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের রপ্তানি আয় বাড়াব ১৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। যদিও এক্ষেত্রে সময় খুব কম। কিন্তু, আমাদের নয়া নয়া বাজার ধরতে হবে। আর একটা লক্ষ্য স্থির থাকলে যে কোন অর্জন সম্ভব হয়। আমরা সেভাবেই কাজ করতে চাই।’

পুরো দেশে তার সরকারের ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হবে ও কোন অঞ্চলে কোন পণ্য ভাল হয়, সেখানে সেই শিল্প গড়ে উঠবে। সেবা খাতেও আমাদের যথেষ্ট সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে ও ভাল সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এই খাতে রপ্তানি আয় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আট বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছে এবং আইসিটি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করার বিশাল সুযোগ সামনে রয়ে গেছে। আইটি খাতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ২৭ দশমিক পাঁচ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ, দেশে পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বিদেশেও রপ্তানি করতে পারছি। যদিও, বিশ্ব মন্দার অভিঘাতে ইউরোপ আমেরিকার অনেক উন্নত দেশেও পণ্য চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে। সেটা মাথায় রেখে নয়া বাজার আমাদের খুঁজতে হবে, নয়া জায়গায় যেতে হবে।’

তার সরকার নানা দেশের সাথে অগ্রাধিকারমূলক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সাথে পণ্য রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে সরকার জাতীয় ‘ট্যারিফ পলিসি ২০২৩’ প্রণয়ন করছে। এটা আমাদের রপ্তানিতে আরো সুযোগ সুবিধা এনে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিদেশী অতিথিরা আছেন। আমি একটা অনুরোধ করব আমাদের আমদানি রপ্তানিতে ভারসাম্য বজায় রাখা একান্তভাবে দরকার। আপনারা রপ্তানি করেন, রপ্তানি করার সময় যে অর্থ ব্যবহার হয় তার যে রিটার্নটা আসবে ঠিক চাহিদা মত তা আসে না। সেদিকে সকলকে একটু যত্নবান হওয়ার আমি আহবান জানাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর একটা পণ্যকে বর্ষপণ্য হিসেবে সুনির্দিষ্ট করে দেই। পাট ও পাট জাত পণ্য, চামড়া ও চামড়া জাত পণ্য, এভাবে প্রতিবছরই বর্ষপণ্য ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এবার আমি ঠিক করেছি ‘হস্তশিল্প পণ্যকে’ ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণার।’

কেন হস্ত শিল্পকে বর্ষপণ্য করা হল তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘এবারের যে বর্ষপণ্য অর্থাৎ, ‘হস্তশিল্প পণ্য’ সেটা আমাদের নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াবে ও এর মাধ্যমে নারীরা স্বাবলম্বীতা অর্জন করতে পারবে।’

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান।

অনুষ্ঠানে ব্যবসায়-বাণিজ্যের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং স্থানীয় ও বিনিয়োগ আকর্ষণে গেল ১৫ বছরে গৃহীত সরকারি পদক্ষেপের ওপর ভিডিও ডকুমেন্টারি দেখানো হয়।