ইসলামবাদ, পাকিস্তান: কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা ‘চূড়ান্ত বিক্ষোভে’ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ইসলামাবাদ। ইমরান সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) অন্তত পাঁচজন নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে চারজনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। সংবাদ জিও নিউজের।
শ্রীনগর মহাসড়কে বিক্ষোভকারীরা রেঞ্জার্স কর্মীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চারজন প্যারাট্রুপার ও একজন বেসামরিক ব্যক্তি রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ প্যারাট্রুপার ও দুই পুলিশ সদস্য।
এ ঘটনার পর ইসলামাবাদে সংবিধানের ২৪৫ ধারা সক্রিয় করে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি অশান্ত করার যে কোন চেষ্টা ও জঙ্গি তৎপরতা কঠোর হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পাঁচটি লাশ এরই মধ্যে স্থানীয় পিআইএমএস হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, ইসলামাবাদের ডি চকে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। তাদের জমায়েত ঠেকাতে ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করেছে শাহবাজ শরিফের সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজধানীতে প্রবেশের সব পথ। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সকল সভা-সমাবেশ এবং ‘দেখামাত্র গুলি’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে পিটিআইয়ের চার হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহিদ নওয়াজ জানান, আটকদের মধ্যে পাঁচজন পার্লামেন্ট সদস্যও রয়েছেন।
এ দিকে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ইসলামাবাদ অভিমুখে গাড়ি বহর নিয়ে রওনা দিয়েছেন ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি এবং খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর। ইসলামাবাদের ডি চক এলাকায় সমাবেশ করতে যাচ্ছেন তারা।
ইমরান খানের মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মাসের শুরুতে কারাগার থেকে সমাবেশের ডাক দেন ইমরান খান। একে তিনি ‘চূড়ান্ত ডাক’ বলে অভিহিত করেছেন। এই ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার (২৫ নভেম্বর) থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে যাত্রা শুরু করে ইমরানের সমর্থকেরা। সমর্থকদের দাবি, ইমরান খানসহ পিটিআই দলের যে নেতারা বন্দি আছেন, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদসহ বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে, ইমরান খানের দল এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছে।
২০২৩ সালের মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন ইমরান। তার বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। পিটিআইয়ের দাবি, মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দলের নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিক্রিয়ায় এর আগেও দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে পিটিআইয়ের সমর্থকেরা।