ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্র অবরুদ্ধ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা থেকে প্রায় দশ লাখ ফিলিস্তিনিকে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় স্থানান্তরের একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাবের কয়েক মাস পর এ পরিকল্পনার ব্যাপারটি সামনে এল।
ব্যাপারটি সম্পর্ক অবগত পাঁচজনের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১৬ মে) প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি।
এই পরিকল্পনাটি এতটাই অগ্রাধিকার পেয়েছে যে, মার্কিন সরকার এরইমধ্যে লিবিয়ার নেতাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করেছে।
২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত বাহিনীর অভিযানে লিবিয়ার প্রাক্তন নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে উৎখাত করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুইজন ব্যক্তি এবং একজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় পুনর্বাসনের বিনিময়ে এক দশকের বেশি সময় আগে দেশটির জব্দ করে রাখা তহবিল যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত করে দিতে পারে।’
ব্যাপারটি নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। এছাড়া গেল ২০ মাস ধরে গাজায় হামলা চালানো ইসরাইলকে আলোচনার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
তবে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রতিবেদনটি ‘অসত্য’।’ এনবিসি নিউজকে তিনি বলেন, ‘মাঠের পরিস্থিতির সঙ্গে এমন পরিকল্পনার কোনো মূল্য নেই। এই ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়নি এবং এর কোনো অর্থ নেই।’
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এনবিসিকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় স্থানান্তরের বিষয়ে কোনো আলোচনা সম্পর্কে তারা অবগত নন।’
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা তাদের মাতৃভূমিতে খুব প্রোথিত, স্বদেশের প্রতি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তাদের ভূমি, তাদের পরিবার এবং তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য যেকোনো কিছু ত্যাগ করতে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাজা ও গাজাবাসীসহ ফিলিস্তিনিদের জন্য কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয় তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র ফিলিস্তিনিদেরই রয়েছে।’
এদিকে গাজা উপত্যকার অনেক বাসিন্দা অনাহারে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল শুক্রবার (১৬ মে) সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমরা গাজার দিকে নজর রাখছি। আমরা পরিস্থিতির যত্ন নেব। সেখানে অনেক মানুষ অনাহারে রয়েছে।’
তবে যত্ন নেওয়া বলতে ট্রাম্প কী বুঝিয়েছেন বা গাজায় ইসরাইলের লাগাতার হামলা নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।
গাজাবাসীদের লিবিয়া স্থানান্তরের বিষয়ে এখনো যুক্তরাষ্ট্র বা লিবিয়া সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।