চট্টগ্রাম: পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার (৯ নভেম্বর) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা বাবুলকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদনসহ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ও পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঢাকার ধানমন্ডি থানায় বনজ কুমার মজুমদার বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামি হলেন বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু (৪৫) ও বাবা মো. আবদুল ওয়াদুদ মিয়া (৭২)।
বনজ কুমার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার নেতৃত্বাধীন তদন্ত সংস্থা পিবিআই, চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলা তদন্তাধীন থাকাকালে প্রধান আসামি হিসেবে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের নাম বেরিয়ে এলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জেলে থাকা বাবুল আকতার মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ ও পিবিআইয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য অপর আসামিরা দেশ-বিদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক বিভিন্ন অপকৌশল ও ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাবুল আকতার ও অন্যান্য আসামির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় কথিত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন গত ৩ সেপ্টেম্বর বিদেশে পলাতক থাকা অবস্থায় তার ফেসবুক আইডি থেকে ইউটিউব একাউন্টে ‘স্ত্রী খুন স্বামী জেলে খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে একটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করেন।
এজাহারে আরো বলা হয়, ‘বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে তদন্তাধীন মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে উল্লেখিত ভিডিও প্রচার করেন। আসামি ইলিয়াস হোসাইন ভিডিওতে প্রচারিত বক্তব্যে দেশের ভাবমূর্তি ও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উসকানি, বাংলাদেশ পুলিশ ও পুলিশের বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও বিশেষ করে বাদীর (বনজ কুমার মজুমদার) মান-সম্মান ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছে; যা দেশের মানুষের মধ্যে এর নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে।’
এজাহারে ওই ভিডিওতে প্রচারিত বিভিন্ন অভিযোগ খণ্ডন করে বলা হয়, ‘আসামি ইলিয়াসের বক্তব্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও বাংলাদেশের সাথে বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করার, রাষ্ট্রের হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা-বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপপ্রয়াস করেছে। শুধু মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারকাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য দুই নম্বর আসামি মো. হাবিবুর রহমান লাবু, তিন নম্বর আসামি আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া ও চার নম্বর আসামি বাবুল আকতারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় এবং সার্বিক সহযোগিতায় এক নম্বর আসামি ইলিয়াস হোসাইন অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বাংলাদেশ পুলিশ ও বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা পিবিআই ও বাদীর মান-সম্মান চরমভাবে ক্ষুণ্ন করার জন্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য সহকারে ফেসবুক আইডি ও ইউটিউব একাউন্টের মাধ্যমে ভিডিও ক্লিপ আপলোড করেন।’