ঢাকা: দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ১১টি জেলায় সাম্প্রতিক আচানক বন্যায় মোট ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিফিংকালে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এ বন্যায় নয় লাখ ৪২ হাজার ৮২১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মারা গেছেন ৭৪ জন ও আহত হয়েছেন ৬৮ জন। চলতি বছর ২০ আগস্ট আচমকা বন্যায় মোট ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি ৬৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫২২ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে জানিয়ে ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘এরমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কর্মসূচিও শুরু হয়েছে। এ জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা কমিটিও গঠিত হবে। এসব কমিটির সদস্যরা পুরো পুনর্বাসন কর্মসূচি মনিটরিং করবেন।’
উপদেষ্টা জানান, বন্যায় ২৩ কোটি ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৭৪০ টাকার ফসল সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ৭১৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬১০ টাকার ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ মোট ঘর পাকা/আধাপাকা/কাঁচা বাড়ির সংখ্যা ২৮ হাজার ৩৮৬টি ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ এক হাজার ৯৭টি।
বন্যাদুর্গত এলাকার কৃষকরা তাদের ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির টাকা আপাতত না নেয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তার প্ররিপ্রেক্ষিতে সরকার কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না জানতে চাইলে ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন,আজকের সভাতে এ ব্যাপারটি উত্থাপিত হলে সকলের মতামতের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ব্যাপারটি বিবেচনা করে তিন মাসের জন্য কিস্তির টাকা রহিত করা হয়েছে।’
আগামী অক্টোবর পর্যন্ত কৃষকদের কিস্তির টাকা দিতে হবে না বলেও তিনি জানান।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক পথের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘দুই হাজার ২৩২ দশমিক ৯২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা সূম্পর্ণ এবং তিন হাজার ৯৮৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার রাস্তা আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ইটখোয়া দ্বারা নির্মিত ২৯৯ দশমিক ৪১ কিলোমিটার সূম্পর্ণ এবং ৯৪৮ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও, কাঁচা রাস্তা এক হাজার ১৫১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার সূম্পর্ণ এবং আট হাজার ৮৪৯ দশমিক ৬১ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।’
এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘বন্যাকবলিত ১১ জেলায় আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা। আমরা সেটা পুষিয়ে নেয়ার জন্য এরইমধ্যে বরাদ্দ করেছি। প্রাথমিকের শিক্ষা কার্যক্রম এক মাসের মধ্যে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।’