রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ধর্ম/কবরে মানুষকে কী কী প্রশ্ন করা হবে?

রবিবার, জুন ৩০, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ডেস্ক রিপোর্ট: জন্ম আছে যার- মৃত্যুও আছে তার। প্রতিটি প্রাণিকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর মৃত্যু-পরবর্তী প্রথম ধাপই হল কবর। কবর থেকে পুনরুত্থান পর্যন্ত জীবনকে বলা হয় আলমে বারজাখ। এ সময়ের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পেলে পরবর্তী ধাপগুলো সহজ হবে।

বিখ্যাত সাহাবি হজরত উসমান (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজিকে (সা.) বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘কবর হচ্ছে আখিরাতের প্রথম ধাপ। যে এর আজাব থেকে মুক্তি পাবে, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলো সহজ হয়ে যাবে। আর যে মুক্তি পাবে না, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলো আরো কঠিন হবে।’ (তিরমিজি: ২৩০৮) প্রতিটি মানুষকে কবরে তিনটি প্রশ্ন করা হবে।

কবরে মানুষকে যে প্রশ্ন করা হবে-

তোমার রব কে: রবের ব্যাপারে বেশির ভাগ মানুষ উদাসীন। দুনিয়ায় তাওহিদুর রুবুবিয়্যা (প্রতিপালনে একত্ববাদ) স্বীকার না করে, তাহলে সেদিন এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব হবে না। তাই, সব সময় তাওহিদুর রুবুবিয়্যা মেনে চলতে হবে। সাধারণ মানুষকে রবের আসনে বসিয়েছে তারাও এ প্রশ্নের উত্তর বলবে, ‘লা আদরি’ অর্থাৎ আমি কিছুই জানি না। মানুষ মানুষকে কিভাবে রব বানায়? কোরআনে এসেছে, ‘তারা তাদের ধর্মীয় গুরু ও নেতাদের (মান্য করার দিক থেকে দেবতা) হিসেবে গ্রহণ করেছে।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩১)

তোমার দীন তথা জীবনব্যবস্থা কী: এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে, যারা পরিপূর্ণভাবে ইসলামকে আঁকড়ে ধরেছে। আর যারা দুনিয়ায় ইসলামকে জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেনি তারা বলবে, ‘লা আদরি’ অর্থাৎ আমি কিছুই জানি না। বাস্তব জীবনে মানবরচিত বিধান জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেছি। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করবে, তা কখনো কবুল করা হবে না। বরং, সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫)

তোমাদের কাছে যে লোকটিকে পাঠানো হয়েছে তিনি কে: কবরের সবশেষ প্রশ্নে বলা হবে, তোমার নবী কে, আদর্শ পুরুষ কে ছিল, তুমি কার সুন্নত তথা রীতিনীতির অনুসরণ করতে? যারা অন্যদের আদর্শে জীবন পরিচালনা করেছে তারা বলবে, ‘লা আদরি’ অর্থাৎ আমি কিছুই জানি না। শুধু যারা নবীজির (সা.) সিরাত ও সুন্নাহ গ্রহণ করেছে ও বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করেছে, তারাই এ প্রশ্নের জবাব দিতেসক্ষম হবে।

যারা এ তিন প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারবে; তাদের সম্পর্কে নবীজি (সা.) বলেন, ‘আসমান থেকে একজন আহবান করে বলেন, আমার বান্দা ঠিক বলেছে। সুতরাং, তার জন্য একটি জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও ও তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও। এছাড়া, তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। নবীজি (সা.) বলেন, ‘তখন তার কাছে জান্নাতের সুখ-শান্তি আসতে থাকে ও তার জন্য তার কবরকে তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেয়া হয়।’

নবীজি (সা.) বলেন, ‘অতঃপর তার কাছে এক সুন্দর চেহারা বিশিষ্ট সুবেশী ও সুগন্ধিযুক্ত ব্যক্তি আসেন ও তাকে বলেন, তোমাকে খুশি করবে এমন জিনিসের সুসংবাদ গ্রহণ কর। আর এ দিনের ওয়াদাই তোমাকে দেয়া হয়েছিল। তখন সে মৃতব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করবে, তুমি কে? তোমার চেহারা এত সুন্দর যে, কল্যাণের বার্তা বহণ করে। তখন সে বলে অমি তোমার সৎ আমল। (আহমাদ, মিশকাত: ১৫৪২)