মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

শিরোনাম

না পালিয়ে দাবানলের বিরুদ্ধে একাই যুদ্ধ করে বাঁচলেন তিনি

সোমবার, জানুয়ারী ১৩, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

ক্যালিফোর্নিয়া: ভয়াবহ দাবানলে কয়েক দিন ধরে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য। রাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলসের অদূরে সূত্রপাত হওয়া আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলছে একরের পর একর জমি। কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ইটনের (এলাকা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের মধ্যেও ট্রিস্টিন পেরেজ (৩৪) ক্যালিফোর্নিয়ার আলতাডেনার বাড়ি ছেড়ে যাননি। একাই লড়েছেন আগুনের বিরুদ্ধে। রক্ষা করেছেন নিজের ও প্রতিবেশীর সম্পদ। সংবাদ রয়টার্সের।

দাবানলের আগুনের শিখা প্রায় তার বাড়ির বেড়া জ্বালিয়ে দিচ্ছিল, ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তার পা অসাড় হয়ে পড়েছিল। এত কিছুর পরেও, পেরেজ তার বাড়ি ছাড়তে রাজি হননি।

এই কাঠমিস্ত্রি মনে করেছিলেন যে, জীবন-হুমকির মধ্যেও তার অন্য কোন উপায় নেই। বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে একজন পুলিশ অফিসার তাকে এবং তার প্রতিবেশীদের সরে যেতে বলেন। কারণ আগুন তাদের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছিল। কিন্তু পালানোর পরিবর্তে পেরেজ তার সম্পত্তি এবং এল মোলিনো অ্যাভিনিউয়ের পাশের প্রতিবেশীদের বাড়িঘর বাঁচানোর চেষ্টার ওপর জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু তার কাছে বাগানে পানি দেয়ার মত পাইপও ছিল না। তার হাতের কাছে থাকা দুটি জলের পাত্র থেকে পানি অনবরত ঢালতে শুরু করলেন আগুনে।

পেরেজ তার ড্রাইভওয়েতে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বাড়ির সামনের উঠোনে আগুন ধরে গেছে, পাম গাছগুলো জ্বলে উঠেছে, মনে হচ্ছিল যেন সিনেমার মত কিছু একটা। আমি আগুন থামাতে ও আমার বাড়িসহ প্রতিবেশীদের বাড়ি বাঁচাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।’

‌‘অবশেষে তার একতলা হলুদ ডুপ্লেক্স বাড়িটি বেঁচে গেছে। পাশের আরও দুটি বাড়িও বেঁচেছে। তবে রাস্তার ওপারে পুরো বাড়িটি জ্বলে মাটিতে মিশে গেছে। তখন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কেবল একটি ইটের চিমনি দাঁড়িয়ে ছিল। রাস্তার ওপারে তাকিয়ে দেখুন, আমি যদি এখানে না থাকতাম, তাহলে এখানেও তাই হত। ওদের জন্য আমার খুব খারাপ লাগছিল। খুবই দুঃখজনক পুরো ব্যাপারটা।’।

পেরেজ তিন বছর আগে আলতাডেনায় চলে আসেন এবং তার দুই শোবার ঘরের ইউনিট ভাড়া নেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের উত্তরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের সম্প্রদায়ের প্রেমে পড়েন তিনি, যেখানে প্রতিবেশীরা বন্ধুত্বপূর্ণ ও একে অপরের যত্ন নেয়।

এ দিকে শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইটনের আগুন ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং লস অ্যাঞ্জেলেস এলাকাজুড়ে আগুনের ঝুঁকি তখনও বেশি।

গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির আশেপাশের ছয়টি এলাকায় একযোগে আগুনের সূত্রপাত হয়। এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ২৪ জন নিহত এবং ১২ হাজারের বেশি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।