নিউইয়র্ক: স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে নিউইয়র্কে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান করেছে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কনসাল জেনারেল, কূটনীতিক, নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের প্রতিনিধিসহ বিদেশী অতিথিদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বীরমুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এর পরেই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা ৭১’-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহিদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী এবং শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২০২৪’-এর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তাদের আশু সুস্থ্যতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে।’
নাজমুল হুদা সকলকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান।
কনসাল জেনারেল বলেন, ‘২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেছে এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মেরামত তথা সংস্কারের এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে।’
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে ‘আমরা দেশের সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি মর্মে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশ্বের নজর কেড়েছে উল্লেখ করে দারিদ্র্য বিমোচন, গণসাক্ষরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম, কৃষি বিপ্লব, গ্রামীণ স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, নবজাতক ও মাতৃস্বাস্থ্য, আয়ুষ্কাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিল্পায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের ধারাবাহিক বৃদ্ধি, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে তার সাফল্যের কথা তুলে ধরেন কনসাল জেনারেল ।
কনসাল জেনারেল স্বাধীনতার কাঙ্খিত লক্ষ্য, তথা একটি গণতান্ত্রিক ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, ন্যয্যতাভিত্তিক, মানবিক ও আধুনিক দেশ গড়ার জন্য সকলকে সচেষ্ট থাকার অনুরোধ জানান। বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি গতিশীল, আত্মপ্রত্যয়ী এবং উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের নতুন প্রজন্ম যে স্বপ্ন দেখছে, তা বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা পৃথিবীতে অবস্থানকারী আমাদের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ভাই-বোনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি তাদের এ সমর্থন এবং সহযোগিতা আরো শক্তিশালী করার অনুরোধ জানান। কনসাল জেনারেল দুই দেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
তিনি কনস্যুলেট জেনারেলের কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে সর্বদা সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য অফিস অব ফরেন মিশনস, মেয়র অফিস, সোসাইটি অব ফরেন কনসালস এবং কূটনৈতিক সম্প্রদায়, ফেডারেল ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিশনার এডওয়ার্ড মারমেলস্টেইন। বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু ও নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক ডেপুটি কমিশনার দিলিপ চৌহান। তারা সবাই নিউইয়র্কে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশ কম্যুনিটির ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং তাদের উত্তোরত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।