নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: ধর্মীয় সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে মানবতার কল্যাণে আত্মনিয়োগের সংকল্প উচ্চারিত হল বড়দিন উদযাপনের সমাবেশে। বাংলাদেশি-আমেরিকান খ্রিস্টান সম্প্রদায় ২৫ ডিসেম্বর তাদের এই বিশেষ দিনটি পালন উপলক্ষে কুইন্সের উডসাইডস্থ ‘ইউনাইটেড বেংগলী লুথারেন চার্চ অব আমেরিকা’ নানা কর্মসূচি নিয়েছিল। সহযোগিতায় ছিল ‘ওজোনপার্ক ইভ্যাঞ্জেলিক্যাল লুথারেন চার্চ।’ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা। মুসলিম কমিনিউটির পক্ষ থেকে সেখানে আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি ও শুভেচ্ছার বার্তা দিতে যোগ দেন মোহাম্মদী সেন্টারের ইমাম কাজী কায়্যুম।
আয়োজক সংগঠনের প্রধান টমাস দুলু রায়ের সার্বিক সমন্বয়ে উপাসনা পরিচালনায় ছিলেন প্যাস্টও জেমস রয়, প্যাস্টর কমল দেব, অ্যাল্ডার থ্রিয়ডোর এ বারিকদার, ভিকার বেনিকিড বারৈ, অ্যাল্ডার সমির রত্ন, এডোয়ার্ড বিশ্বাস, ড. ডিএইচ ব্যাংকে।
যিশুর জন্মের ভবিষ্যৎবাণী ও পূর্ণতা সম্পর্কে আলোকপাত করেন প্যাস্টও কমল দেব। বাইবেল থেকে পাঠ করেন শিখা অধিকারি। সমবেত সকলকে স্বাগত জানিয়ে দিবসের তাৎপর্য নিয়ে কথার বলেন প্যাস্টর কাজল সরকার। প্রার্থনা উৎসবে নেতৃত্ব দেন জেমস রয় ও জন এস রত্না। তারা ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিতে নিপতিত মানুষদের পরিত্রাণে যিশু খ্রিস্টের দয়া কামনা করেন। গান, কবিতা আর জয়ধ্বনিতে মুখরিত অবস্থায় সমাবেশে আগতদের মধ্যে বড়দিনের খাবার পরিবেশন করা হয়। সমবেত কণ্ঠে গীত হয় ‘পথহারা পথিকেরা আয় ছুটে আয়, পেয়েছি ঐ পথের দিশা নতুন তারায়। লক্ষ কোটি শত তারকার ভীড়ে-আধারের বুকে চলে ধীরে ধীরে। পাপী তাপী ব্যথিতেরে বারে বারে ফিরে পথ সে দেখায়।’
বিশাল এ আয়োজনে শিশুদের মধ্যে বড়দিনের উপহার বিতরণ করা হয়। বড়দিনের ডিনার পরিবেশনায় সহযোগিতা করেন জেমস এন সরকার, সুজিত কীর্তনিয়া, টমাস দুলু রায়, জন এস বাড়ৈ, সিলভিয়া রয়, ফ্রান্সিস রোজারিয়ো, আলেক্স সাহা, জেমস রয়, মরিয়ম দাস, বাপী অধিকার প্রমুখ।
বিশ্ববাসীর শান্তি কামনায় যিশুর জন্মদিন উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর বুধবার এলমর্হাস্টের শ্রীশ্রী ঠাকুরঅনুকুল চন্দ্র সৎসঙ্গঁ ইউএসএএর ব্যবস্থাপনায় যিশুর জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা, জন্মদিনের কেক কাটা, ভক্তিমূলক গান ছাড়াও ছিল খেলাধুলা। এছাড়া পারিবারিক সুখ, শান্তি, কল্যাণ সমৃদ্ধি ও বিশেষ শান্তির জন্য সৎসঙ্গেঁর বিশেষ এ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিলো প্রার্থনা, সদগ্রন্থাদি পাঠ, ধর্মীয় আলাচনা ও সংগীত পরিবেশনা। শ্রী শ্রী ঠাকুরের স্বহস্তে লিখিত সত্যানুসরণ থেকে পাঠ করেন শুভাশীষ দত্ত। শ্রী মদ্ভগবদ থেকে পাঠ করেন সুধন্যসেন, পূন্য পূঁথি থেকে সুভাষ পাল। নারী নীতি থেকে প্রিয়া দেবনাথ ও যীশুর জীবন চরিত মানবজীবন উন্নয়নে ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা করেন অজিত ভৌমিক স্বস্তয়নী ব্রতধারী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দিবাকর রায়। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহায়তা করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ তালুকদার, সহ-সভাপতি কল্যাণ ব্রত পান্থ দাস, উপদেষ্টা বিশ্বনাথ মিত্র, সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ দত্ত, কোষাধ্যক্ষ উত্তম চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অনামিকা মজুমদার, সহ: সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রিমা রায়, মহিলা সম্পাদিকা হাসি রানী চাকী।
ধর্মীয় সংগীতে মিঠুয়া রায় স্বস্তয়নী ব্রতধারী ও লিপিকা তালুকদার, জয়শ্রী রায়, টুম্পা দাস গুপ্তা, সীমাবর্দ্ধন ও ইন্দ্রজিত সিংহ রায়।