রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাখ্যা দিলেন বাইডেন

শুক্রবার, জুলাই ২৬, ২০২৪

প্রিন্ট করুন
জো বাইডেন

ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: টানা দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে ছিলেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে, সম্প্রতি সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ওই ঘোষণার তিন দিন পর এ নিয়ে সমর্থকদের মনের অন্ধকার দূর করেছেন প্রেসিডেন্ট নিজেই।

বুধবার (২৪ জুলাই) রাতে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন জো বাইডেন। ভাষণে আসন্ন নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

১১ মিনিটের ওই ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশের সেবা করতে আমি নিজেকে যোগ্য বলেই মনে করি। তবে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে আমাদের যে কোন কিছু করার জন্যে প্রস্তুত থাকা উচিৎ। এখানে ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ নয়।’

রোববার (২১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। গেল ২৭ জুন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে বিপর্যয়কর পারফরম্যান্সের পর তার বয়স ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে নিজ দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ৩০ জনের বেশি আইনপ্রণেতা প্রকাশ্যে তাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

এ ব্যাপারে বাইডেন বলেন, ‘এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে নয়া প্রজন্মের হাতে অগ্রগতির মশাল তুলে দেয়া। তাই, আমি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

‘এটি আমাদের জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার সর্বোত্তম উপায়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ‘একটি সন্ধিক্ষণে রয়েছে’ উল্লেখ করে ৮১ বছর বয়সী এ রাজনীতিক বলেন, ‘দেশের জনগণ এখন যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা আগামী কয়েক দশকের জন্য মার্কিনীদের পাশাপাশি পৃথিবীর ভাগ্য নির্ধারণ করবে।’

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান তিনি। পাশাপাশি, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করে হ্যারিসকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে তিনি দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়ে এরমধ্যে দলের অসংখ্য নেতার সমর্থন অর্জন করেছেন বলে এ সময় জানান হ্যারিস।

তিনি বলেন, ‘আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য (প্রেসিডেন্ট) নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী হতে আমি এরমধ্যে যথেষ্ট সমর্থন পেয়েছি।’

এ দিকে, বাইডেনের মনোনয়ন প্রত্যাহার ঘোষণার পর বুধবার (২৪ জুলাই) প্রথম বারের মতো নর্থ ক্যারোলিনায় নির্বাচনি সমাবেশে অংশ নেন ট্রাম্প।

এরপর সামাজিক যোগাযো গমাধ্যমে বাইডেনের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘কুটিল জো বাইডেন ওভাল অফিসে কী যে বললেন, তার বেশিরভাগই বোঝা গেল না।’

আরেকটি পোস্টে তিনি বাইডেন ও হ্যারিসকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় লজ্জা’ বলে অভিহিত করেছেন।

এর পূর্বে, মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) উইসকনসিনের মিলওয়াকিতে নিজের প্রথম নির্বাচনি প্রচার অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করেন হ্যারিস। নভেম্বরের নির্বাচনে নিজের ‘স্বাধীনতা, সহানুভূতি ও আইনের শাসন’ বনাম ট্রাম্পের ‘বিশৃঙ্খলা, ভয় ও ঘৃণা’ এর মধ্যে একটিকে বেছে নিতে ভোটারদের আহ্বান জানান তিনি।

বর্তমানে, ভোটারদের কাছে হ্যারিসের সমর্থনের হার উল্লেখযোগ্য হারে বেশি নয়। এমনকি তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জরিপে বাইডেনকেও এখনও সেভাবে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি।

রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিক্সের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, জাতীয় জরিপে হ্যারিসের চেয়ে গড়ে এক দশমিক সাত শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প।