মেমফিস, টেনেসি: নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক টায়ার নিকোলসকে হত্যাকারী সেই ‘স্করপিয়ন ইউনিট’ই বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের মেম্ফিস পুলিশ। শনিবার (২৮ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিস পুলিশ বিভাগের মুখপাত্র মেজর কারেন রুডলফ। খবর সিএনএনের।
নিকোলসকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্যই ছিলেন ‘স্করপিয়ন ইউনিট’র সদস্য। মেম্ফিস পুলিশ থেকে স্করপিয়ন ইউনিট পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ করার পর থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবারও (২৮ জানুয়ারি) রাস্তায় রস্তায় প্লেকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দেখা যায় মার্কনিদের।
বিবৃতিতে মেজর কারেন রুডলফ বলেন, ‘যে কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে, তারা স্করপিয়ান ইউনিটের সদস্য ছিলেন।’ তার কিছুক্ষণ আগেই মেম্ফিস পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ঘোষণা করে, স্কোরপিয়ন ডিপার্টমেন্ট বিলুপ্ত করা হবে। তবে এ পদক্ষেপের বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে মেমফিস মেয়রের কার্যালয়। যে রাস্তায় ২৯ বছর বয়সি টায়ার নিকোলসকে নির্যাতন করা হয়েছিল, সেই রাস্তার পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ।
মেমফিসের বাসিন্দাদের এ দিন সেখানে জড়ো হয়ে নিকোলাসের জন্য প্রার্থনা করতে দেখা যায়। নিউইয়র্ক সিটি, আটলান্টা, বোস্টন, বাল্টিমোর, লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো ও পোর্টল্যান্ডের মতো শহরগুলোতেও দেখা যায় কড়া বিক্ষোভ। এ সময় আন্দোলনকারীরা কর্তৃত্বের অপব্যবহার বন্ধ করার আহবান জানান।
বিতর্কিত এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অযোগ্য ব্যক্তিদের সরাতে ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের দিকে বিশেষ নজরদারির আহবান জানান ডেমোক্র্যাট নেতা রেপ স্টিভ কোহেন। তিনি বলেন, ‘যারা টায়ার নিকোলসকে নির্মমভাবে মারধর করেছে, তারা মূলত নীল টেস্টোস্টেরন এবং অহংকারের বশীভূত হয়েই এ কাজ করেছে। এসব ‘পচা আপেলদের’ নিধন করতে হবে।’
নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া নিকোলসের নির্যাতনের ভিডিও সম্পর্কে কোহেন জানান, স্করপিয়ন পুলিশরা আইন নিজ হাতে নিয়েছে, তারা তাদের শপথ ভঙ্গ করেছে। আমি জানি না, তাদের কেমন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে!’
টায়ারের পরিবারের আইনজীবী আন্তোনিও রোমানুচি মেম্ফিস পুলিশকেও দ্রুত ইউনিটটিকে স্থায়ীভাবে ভেঙে দেয়ার আহবান জানিয়েছে।
সড়ক অপরাধকর্ম রোধ করে নাগরিকদের মাঝে শান্তি ফিরিয়ে আনা’র লক্ষ্যে মেমফিস পুলিশের স্করপিয়ন ইউনিটটি চালু করা হয় ২০২১ সালে। গণহত্যা, ছিনতাই, হামলা ও অন্যান্য অপরাধ দূর করার জন্যই এ শাখার উৎপত্তি হয়।
সহিংস অপরাধকর্ম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে তাদের নজরদারি চলত। টায়ার নিকোলস হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয় পুলিশের এ বিশেষ ইউনিটের পাঁচ সদস্য। অভিযুক্তরা হলেন- ট্যাডাররিয়াস বিন, ডেমেট্রিয়াস হ্যালি, জাস্টিন স্মিথ, এমিট মার্টিন ও ডেসমন্ড মিলস জুনিয়র।
তাদের সবার বিরুদ্ধে সেকেন্ড-ডিগ্রি মার্ডার, আক্রমণ, অপহরণের দুইটি, সরকারি অসদাচরণের দুইটি এবং সরকারি নিপীড়নের একটি অভিযোগ আনা হয়েছে।