ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ দশ দফা দাবি আদায়ে বিএনপি যে পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে; তা পদযাত্রা নয়, মরণযাত্রা। বিএনপির গণজোয়ারে ভাটা পড়েছে। তাদের পদযাত্রা নয়, মরণযাত্রা শুরু হয়েছে। এভাবেই তারা পরাজিত হবে, আন্দোলনে হবে, আগামী নির্বাচনেও তাদের মরণ হবে, রাজনৈতিক মরণ।’
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে উত্তরার আজমপুর এলাকায় আমিন মার্কেটের সামনে বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সমাবেশ ও দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে এ শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘এত লাফালাফি, এত ছোটাছুটি, এত লোটা-কম্বল, এত কাঁথা-বালিশ; সমাবেশ হলে সাত দিন ধরে সমাবেশস্থলে শুয়ে পড়ে; আর পাতিলের পর পাতিল খাবার তৈরি হয়; কোথায় গেল সে দিন? কোথায় গেল লালকার্ড? কোথায় গেল গণঅভ্যুত্থান? কোথায় গেল গণজোয়ার? গণজোয়ারে এখন ভাটার টান। তাই, এটা পদযাত্রা নয়, পেছনযাত্রা। এটা পদযাত্রা নয়, মরণযাত্রা।’
তিনি বলেন, ‘তারা পদযাত্রা করছে, আর আমরা শীতবস্ত্র বিতরণ করছি। আমরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করছি না। তারা বাড্ডায় পদযাত্রা করছে, আমরা উত্তরায় শীতবস্ত্র বিতরণ করছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি তো এখন কথার রাজা। মির্জা ফখরুল, কাজ নেই শুধু কথা আর কথা। শুধু কথার মালার চাতুরী। কাজ করছি, আর বাধ্য হয়ে তাদের কথার জবাব দিচ্ছি। তারা একতরফা মিথ্যাচার করবে। আমরা কী চুপচাপ বসে থাকব? আমাদের অবশ্যই জবাব দিতে হবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুল রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকী, ঢাকা ১৮ আসনের সাংসদ হাবিব হাসান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে শান্তি সমাবেশ থেকে বলব, ডাক দিলে চলে আসবেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়াই করছি। রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথ আমরা ছাড়ব না। আমরা মানুষের পাশে ছিলাম, এ শীতের কষ্টেও মানুষের পাশে আছি। মানুষের দুঃখে, মানুষের কষ্টে, দুর্যোগে, ঝড়ে, বন্যায় মানুষের পাশে ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের ৭০ বছরের ইতিহাস, মানুষের পাশে থাকা, মানুষের পাশে আছি। নির্বাচনে জিতলেও আছি, নির্বাচনে হেরে গেলেও আছি। হার-জিত আল্লাহ পাকের ইচ্ছা। জনগণের ইচ্ছা। জনগণ চাইলে আমরা নির্বাচিত হব। আর জনগণ না চাইলে ২০০১ সালের মত আমরা বিদায় নেব। এটাই তো আওয়ামী লীগের রাজনীতি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ দলের শিকড় বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে। অনেক গভীরে। তাই, আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেবেন, এ দিবাস্বপ্ন দেখে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ পালাবে না। আওয়ামী লীগ পালাবার দল নয়, এ দেশেতে জন্ম আমার, যেন এ দেশেতে মরি।’
খেলা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আন্দোলনে খেলা হবে, নির্বাচনে হবে বিএনপির বিরুদ্ধে, খেলা হবে; বলে ৫৪ দল, আবার বলে দশ দফা, আবার বলে রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা! শুক্রবার দেখলাম ১৪ দফা। ৫১ দফার আন্দোলন চলছে, দল হচ্ছে ৫৪টা জগাখিচুড়ি, ঐক্যজোট জগাখিচুড়ি। কর্মসূচি কোন দিনও এ দেশে সফল হবে না।’
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার রাস্তায় নেমেছে। আমরা বার বার বলেছি, আগামী সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। আপনাদের (বিএনপি) যদি জনগণের ওপর আস্থা থাকে, আসুন, নির্বাচনে অংশ নিন। নির্বাচনে অংশ নিয়ে আপনাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। কিন্তু নির্বাচনে তারা (বিএনপি) যাবে না। বিএনপি-জামায়াত এ অশুভ শক্তি তারা আসলে নির্বাচন চায় না। তারা জানে, জনগণ কখনো তাদের ক্ষমতায় আনবে না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশের গণমানুষের দল, আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের বিপদে-আপদে, দুর্যোগে, সুখে, দুঃখে সব সময় মানুষের পাশে থাকে, সেটা বার বার প্রমাণ করেছে। আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশ একটা উন্নয়ন রাষ্ট্রের মাইলফলক করতে সক্ষম হয়েছে।’