সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

পুলিশ ও আওয়ামী নেতা-কর্মীদের ওপর বিএনপির হামলা পরিকল্পিত

বুধবার, জুলাই ১৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: ‘বিএনপি তাদের কর্মসূচি থেকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করছে।’ বলেছেন তথ্য মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রচার মন্ত্রী আরো বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিএনপি সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। আমাদের দলের পক্ষ থেকেও শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা করা হয়েছে। বিএনপির এ কর্মসূচিগুলোর মূল উদ্দেশ্য যে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, সেটি মঙ্গলবার ফের স্পষ্ট হয়েছে। তারা নয়টি জায়গায় পুলিশের সাথে ও অনেক জায়গায় আমাদের দলীয় কর্মীদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।’

এ সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ছবি তুলে ধরে তথ্য মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ঢাকায় মিরপুরে বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুবেল হোসেনের বাইক জ্বালিয়ে দিয়েছে, একইসাথে জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছে। খাগড়াছড়িতে তারা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক নূরুল আজমসহ বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে, পৌর ভবনেও হামলা চালিয়েছে। বগুড়ায় বিনা অনুমতিতে জোর করে সাতমাথা মোড়ে যাওয়ার পথে বাধা দিতে গেলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়েছে, আত্মরক্ষার্থে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুঁড়তে বাধ্য হয়।’

হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘লক্ষ্ণীপুরে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির নেতৃত্বে মিছিলটি সামাদ একাডেমির সামনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ব্যানার ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে। বিএনপির ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে আসা ১৫-২০ জন নেতা-কর্মীকে ধাওয়া করে। এতেই পরবর্তী সংঘর্ষ বাধে।’

‘এভাবে বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় উস্কানি দিয়ে সংঘর্ষ বাঁধিয়েছে, অর্থাৎ তারা যে সাংঘর্ষিক রাজনীতি করে ও জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি থেকে তারা যে সরে আসেনি, সেটি মঙ্গলবার প্রমাণ করেছে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ বলেন, ‘আজকে ফের তাদের পদযাত্রা কর্মসূচি। আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি ও একইসাথে আমাদের শান্তি উন্নয়ন শোভাযাত্রাও অনুষ্ঠিত হবে। তারা এ ধরণের সংঘর্ষ বাঁধিয়ে দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়, আমরা সেই সুযোগ তাদের দেব না।’

ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপরে দুস্কৃতিকারীদের হামলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া মন্তব্যকে আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতি হিসেবে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘আমি খুব আশ্চর্য হয়েছি যে, জাতিসংঘের এখানকার আবাসিক প্রতিনিধির টুইটকে জাতিসংঘের বিবৃতি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারনেশনালের টুইটকেও সংস্থাটির বিবৃতি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। এভাবে যেটি যা নয়, সেটিকে তা হিসেবে প্রচার করা বা সংবাদ তৈরি করা ‘ম্যাল-ইনফরমেশন’ বা অপসাংবাদিকতার পর্যায়ে পড়ে।’

‘একটা টুইট যেটা জাতিসংঘের নয়, ইউএন হেডকোয়ার্টারের কারো টুইটও নয়, এখানকার আবাসিক প্রতিনিধির একটা টুইটকে জাতিসংঘের বিবৃতি বা জাতিসংঘের বক্তব্য হিসেবে প্রচার করা কখনো সমীচীন নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের একজন আবাসিক প্রতিনিধি একটা টুইট করল, “দিজ ইজ রিয়্যাকশন অভ হার, দিজ ইজ নট দা রিয়্যাকশন অভ ইউএন’। আমাদের গণমাধ্যমগুলো এটাকে জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রচার করা সঠিক নয়।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আমি তথ্য মন্ত্রী ও সরকারি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যদি একটা টুইট করি বা ফেইসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেই, সেটি কি সরকারের বা দলের বক্তব্য হবে? এখানকার আবাসিক প্রতিনিধির একটা টুইটকে আবার অ্যামনেস্টি ইন্টারনেশনালের টুইটকে তাদের পুরো প্রতিষ্ঠানের বিবৃতি হিসেবে প্রচার করা সমীচীন নয়, এটি অপসাংবাদিকতার পর্যায়ে পড়ে। সুতরাং, আমি তথ্য মন্ত্রী হিসেবে বিনীত অনুরোধ জানাব, এগুলো থেকে সবাইকে বিরত ও সতর্ক থাকার জন্য।’

এ সময় আশরাফুর আলমের ওপরে হামলা একটি ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছিল, শেষ পর্যায়ে একজন প্রার্থীর ওপর হামলা পরিচালনার উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনকে বিতর্কিত করা। আমরা মঙ্গলবারই এর নিন্দা জানিয়েছি। যারা করেছে, তারা সরকারি দলের ওপর কালিমা লেপন, নির্বাচন কমিশন বা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যেই এটি করেছে। সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, এ নিয়ে গ্রেফতার হয়েছে, তদন্ত হচ্ছে।’