ঢাকা: পুলিশ কনস্টেবল শামীম হত্যা মামলায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেলসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হল।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ঢাকার অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক বিলকিস আক্তার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে এ অভিযোগ গঠন করেন।
এ মামলার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপর আসামিরা হলেন বিএনপির কর্মী আব্দুস সাত্তার, শাহ আলম, আনোয়ার হোসেন টিপু, আলফাজ ওরফে এলাইস আব্বাস ও রফিক।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি রমনা এলাকায় বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীরা লাঠি সোটা ককটেল বোমাসহ মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ বহনকারী একটি বাসে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে পুলিশ কনস্টেবল শামীম মারা যান। এ ঘটনায় ১৮ জানুয়ারি উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে রমনা মডেল থানায় এ মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. আলী আক্কাছ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, ‘আসামি আনোয়ার হোসেন টিপু ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও আসামি মোহাম্মদ হোসেন নিউমার্কেট থানার ১৮ ওয়ার্ডের সভাপতি ও আসামি সাত্তার নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার জন্য ২০ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে আন্দোলন বেগবান করার উদ্দেশ্যে ও দলের হাই কমান্ডের কাছে নিজের অবস্থান সুসংহত করতে বিভিন্ন ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় তাদের কর্মসূচির মধ্যে তারা নাশকতা সৃষ্টি করে পুলিশের মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য পুলিশের উপর আক্রমণ করে ও গাড়ি পোড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা শুরু করে। যার ফলে ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামি হোসেন, সাত্তার, রফিক ও আলফাজ চারজন শাহবাগে একত্রিত হয়। সেখানে চা পান করে তারা শিশু পার্কের দিকে হাঁটতে থাকে। পার্কের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পর আসামি হোসেন ও সাত্তার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের দিকে হাঁটতে থাকে। তাদের দেখে আসামি রফিক ও আলফাজ একই দিকে হাঁটতে থাকে। রমনা পার্কের রমনা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বসে পরিকল্পনা করে সাত্তার সেখানে টিপুকে আসতে বলেন। আলোচনার সময় টিপু ও শাহ আলম মোটরসাইকেলে সেখানে আসেন। তখন শপিং ব্যাগ নিয়ে টিপু বসে ছিল ও শাহ আলম মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। আসামিরা মোটরসাইকেল থেকে নেমে তাদের চারজনের সাথে কথা বলার পাঁচ থেকে দশ মিনিট পর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের নুরুজ্জামান জনি সেখানে আসে। তারপর আলফাজ ও শাহ আলমকে বাইরে রেখে অপর পাঁচজন আলোচনা করে। গাড়ি পোড়ানো ও বিস্ফোরণে কাজের ব্যয়ের জন্য আসামি হোসেনকে অর্থ সরবরাহ করতে বললে সে রাজি হয়। আলোচনার পর আসামি টিপু ব্যাগ থেকে বোমা বের করে রফিকের কাছে দেয়। পরবর্তী পুলিশের গাড়ি আসলে আসামি সাত্তার সংকেত দেয়। আসামি টিপু, নুরুজ্জামান ও রফিককে সিগনাল দিলে প্রথম টিপু পরপর দুটি পেট্রোল বোমা পুলিশের গাড়ির সামনের গেটের ভিতরে এবং রফিক তিন থেকে চারটি ককটেল বোমা গাড়িতে মারে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। এতে কনস্টেবল শামীম নিহত হন।