সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ফিরলেন এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক, চট্টগ্রাম বন্দরে সাদর অভ্যর্থনা

মঙ্গলবার, মে ১৪, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার ৬৫ দিন পর অবেশেষে চট্টগ্রামে ফিরলেন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিক। তারা দেশে ফিরে আসায় অবসান হল তাদের পরিবার ও স্বজনদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। নাবিকদের উৎকণ্ঠা কেটে যেতেই উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা আর পরিবারের স্বজনরা বরণ করে নেন তাদের। মুক্ত হওয়া নাবিকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকাল পৌনে চারটার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল-১ (এনসিটি) নম্বরে এসে পৌঁছান নাবিকরা।

নাবিকদের বহন করা জাহাজ এমভি জাহান মনি-৩-কে ছোট ছোট তিনটি টাগবোট পাহারা দিয়ে জেটিতে নিয়ে আসে। জাহাজটি জেটিতে ভিড়লে সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দুপুর দুইটার দিকে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপকূল থেকে তাদের নিয়ে রওনা দিয়েছিল জাহাজটি। এনসিটি-১ জেটিতে পূর্বে থেকেই জড়ো হয়েছিলেন নাবিকদের স্বজনরা।

জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম) গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাতসহ কর্মকর্তারা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা মুক্ত নাবিকদের বরণে সেখানে সমবেত হয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বন্দর নাবিকদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

নাবিকদের ফেরার সংবাদ পেয়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিকের সংবর্ধনায় হাজির হন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

চবকের পক্ষ থেকে নাবিকদের সংবর্ধনা দেয়া হয় বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক।

এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের ছোট ভাই আবদুর নূর খান আসিফ বলেন, ‘আমার বড় ভাই ফিরে আসায় আমরা যে কতটা খুশি, তা ভাষায় বুঝাতে পারব না। পরিবারের সকলে এ দিনের অপেক্ষায় ছিলাম।’

কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাজের নাবিকরা মঙ্গলবার (৪ মে) বিকাল চারটার দিকে চট্টগ্রামে ফিরেছেন। তাদের বরণ করে নিতে পরিবারের অনেকেই বন্দরে এসেছেন। অনুষ্ঠান শেষে নাবিকেরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাবেন। তাদের বাড়ি ফিরতে যেন কোন বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়, তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

এ দিকে, মঙ্গলবার (১৪ মে) কুতুবদিয়ায় থাকা এমভি আবদুল্লাহর দায়িত্ব নয়া নাবিকদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মিজানুল ইসলাম।

জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হয়ে এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়া থেকে গেল ২২ এপ্রিল দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে ভিড়ে। সেখানে কয়লা খালাস শেষে ২৭ এপ্রিল মিনা সাকার বন্দরে যায় জাহাজটি। ওই বন্দর থেকে ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর বোঝাই করে রওনা দেয় চট্টগ্রামের উদ্দেশে। এ দিন সকালেই বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছে যায় জাহাজটি।

মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে সোমালিয়ার কাছে গেল ১২ মার্চ জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। উপকূলের ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে অস্ত্রের মুখে জাহাজ ও ২৩ নাবিককে জিম্মি করে ফেলে জলদস্যুরা। এরপর ৩৩ দিন কাটে নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে। গেল ১৪ এপ্রিল মুক্তিপণ দিয়ে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয় ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি। জিম্মিদশা থেকে মুক্তি মেলার পর থেকেই ২৩ নাবিকের স্বজনেরা রয়েছেন আপনজনের ঘরে ফেরার অপেক্ষায়। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান হল নাবিকদের ঘরে ফেরার মধ্য দিয়ে।