নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান: মায়ানমার থেকে ছোড়া আরও একটি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের ভেতরে এসে পড়েছে। অবিস্ফোরিত মর্টারের গোলা পড়ার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই বিস্ফোরিত গোলা এসে পড়েছে বান্দবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘুমধুমের পশ্চিমপাড়ায় বিকট শব্দে আছড়ে পড়ে একটি গোলা। এতে কেউ হতাহত না হলেও পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে, মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ঘোনার পাড়া এলাকায় উড়ে আসে অবিস্ফোরিত একটি গোলা।
গেল কয়েক দিন ধরে মায়ানমারে টানা গোলাগুলি ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন বান্দরবান ও টেকনাফ সীমান্তের লাখো মানুষ। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না তারা, সন্তানকে স্কুলে পাঠানো নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
বান্দরবান জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গেল কয়েক দিনে ২০টির বেশি মর্টারের গোলা এসে পড়েছে বাংলাদেশের মাটিতে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। জেলার ৪৬৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি। যার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে ঘুমধুম মায়ানমারের সীমান্তবর্তী। এ ইউনিয়নের ১৫ কিলোমিটারের অবস্থান মায়ানমারের সীমানা ঘেঁষে। যেখানে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে ১৫ হাজারের বেশি মানুষের।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকা নীরব। ঘর থেকে খুব প্রয়োজন না হলে বের হচ্ছেন না স্থানীয়রা। সংঘাত মায়ানমারের ভেতরে হলেও দুই পক্ষের ছোঁড়া গুলি ও মর্টারের গোলা মাঝে মধ্যেই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশিদের বাড়ি ও ফসলের জমিতে এসে পড়ছে। সীমান্তের খুব কাছাকাছি আকাশে উড়ছে হেলিকপ্টার। ভয়ে সীমান্ত লাগোয়া জমিতে চাষাবাদের কাজেও যাচ্ছেন না স্থানীয় কৃষকরা।
কেবল ঘুমধুমেই যে এ চিত্র তা নয়, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, দোছড়ি ও বাইশারী ইউনিয়নেরও অন্তত ২২ হাজার মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে।
স্থানীয়রা বলছেন, ‘মায়ানমারের জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান এ সংঘর্ষ তাদের যাপিত জীবনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করছে। নিত্যদিনের কাজে বের হতে ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা।