ঢাকা: ফের বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ব্যাপারটি দেখভালে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে তার সফরটি হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে, সফরটির দিনক্ষণ ও কর্মসূচিতে সংযোজন-বিয়োজনের সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকায় এখনই খোলাখুলি সব বলতে নিষেধ রয়েছে বলে দাবি করেছেন সরকারি এক কর্মকর্তা। প্রায় অভিন্ন অবস্থান ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের।
সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা বলছেন, গেল ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বহুল আলোচিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নয়া সরকার গঠনের পরপরই বাইডেন প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফরের আলোচনা শুরু হয়। নির্বাচন প্রশ্নে ওয়াশিংটনের স্বতন্ত্র অবস্থান থাকলেও দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বহুমাত্রিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে গেল ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটিই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কোন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।
কর্মকর্তারা জানান, সরকার এরইমধ্যে ১০০ দিন পার করেছে বিধায় প্রস্তাবিত অন্য সফরগুলো বাস্তবায়নে মনোনিবেশ করছে ঢাকা।
কর্মকর্তাদের মতে, বিভিন্ন কারণে সাউথ এশিয়ায় আলোচিত ডোনাল্ড লুর ঢাকায় এটি হবে চতুর্থ সফর। একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে বাংলাদেশের জন্য স্বতন্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ঘোষণাসহ নানামুখী তৎপরতার পার্ট হিসেবে গেল জুলাইতে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জিয়ার সাথী হয়ে এসেছিলেন তিনি।
ভোটপূর্ব রাজনৈতিক মাঠের বাড়তি উত্তাপের কারণে উজরা জিয়া ও ডোনাল্ড লুর যুগল সফরটি দেশ ও দেশের বাইরে বেশ আলোচনায় ছিল। উজরা জিয়া ও ডোনাল্ড লু সেই দিন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন।
নির্বাচন কোন ফর্মে হবে তা নিয়ে যে যুক্তরাষ্ট্রের কোন চাওয়া নেই, সেটি তাদের সফরে স্পষ্ট করা হয়েছিল। মূলত ব্যাপারটি বাংলাদেশের নেতৃত্বের ওপর ছেড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাই, তো শিরোনাম হয়েছিল- ‘বাংলাদেশের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে বিমানে উঠলেন উজরা’। সাথে ডোনাল্ড লু।
আলোচিত সেই সফরে প্রভাবশালী ওই কর্মকর্তা খোলাসা করেই বলেছিলেন, ‘আসুন, বাংলাদেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিই।’
জুলাইয়ের ঢাকা সফরের পরও উজরা জিয়া ও ডোনাল্ড লুর সাথে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ নিয়েই আলোচনা হয়েছে।
সর্বশেষ গেল মার্চে ডোনাল্ড লু ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন।
সেই বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি-মার্কিনীদের কথা উল্লেখ করে লু বলেন, ‘তাদের শক্তি ও অসাধারণ কঠোর পরিশ্রম দুইটি জাতির মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছে। বাংলাদেশি-মার্কিনীরা দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তা গর্বের ব্যাপার।’