নাকুরা, লেবানন: ফের লেবাননে ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বাহিনী। এতে দুইজন নিহত হয়েছে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় নাকুরার কাছে ওই হামলা চালানো হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সংবাদ আল জাজিরার।
তবে, ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। লেবাননের গণমাধ্যমের সংবাদে বলা হয়েছে, ‘একটি যানবাহনে ওই হামলা চালানো হয়।’ ইসরায়েলের বাহিনীও রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাতভর হামলার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর সামরিক ভবনে এসব হামলা চালানো হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। এক দিকে, হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। অপর দিকে, পাল্টা উত্তর হিসেবে হিজবুল্লাহও দফায় দফায় রকেট ছুড়ছে। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কোন দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনী না হয়েও পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক অস্ত্রসম্ভারে সজ্জিত সামরিক শক্তিগুলোর অন্যতম হল লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ সংগঠন। মূলত এ ধরনের বাহিনীগুলোর মধ্যে তারাই সবচেয়ে শক্তিশালী এবং তাদের অর্থ ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে ইরান।
হিজবুল্লাহর প্রধান শেখ হাসান নাসরুল্লাহর দাবি অনুযায়ী, তাদের প্রায় এক লাখ যোদ্ধা আছেন। যদিও বিভিন্ন নিরপেক্ষ সূত্রে এ সংখ্যাটা ২০-৫০ হাজারের মধ্যে বলে মনে করা হয়।
হিজবুল্লাহর এ সদস্যরা সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও তাদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতাও আছে। এদের অনেকেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধেও লড়াই করেছেন।
স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের হিসেব অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর কাছে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র আছে। তাদের এ অস্ত্রভাণ্ডারের বেশির ভাগই ছোট আকারের আনগাইডেড ভূমি-থেকে-ভূমি আর্টিলারি রকেট।
তবে, হিজবুল্লাহর বিমান ও রণতরী-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র আছে বলেও ধারণা করা হয়। তাছাড়া, তাদের বেশ কিছু ‘গাইডেড’ ক্ষেপণাস্ত্রও আছে, যেগুলো ইসরায়েলের বহু ভেতরে গিয়েও আঘাত হানতে সক্ষম।
গাজা ভূখণ্ডে হামাসের হাতে যে ধরনের অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে, তার তুলনায় হিজবুল্লাহর এ অস্ত্রভাণ্ডার বহু বেশি আধুনিক ও বিধ্বংসী।
গেল ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে ঢুকে আচমকা হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকেই হামাসের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেখিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালানো শুরু করে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ফলে, সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তেও।