রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু আর নেই

সোমবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩

প্রিন্ট করুন
আতিকুর রহমান সালু

পেটারসন, নিউ জার্সি, যুক্তরাষ্ট্র: মারা গেছেন আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু। গেল ৫ ডিসেম্বর ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি রাজ্যের সেন্টমেরী হসপিটালে তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মরহুমের নামাজে জানাজা ৬ ডিসেম্বর দুপুরে নিউ জার্সির পেটারসনের জালালাবাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিনই জালালাবাদ কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

চলতি বছরের মাঝামাঝি আতিকুর রহমান সালু ক্যান্সার রোগ ধরা পড়ে। এরপর থেকেই তার চিকিৎসা চলছিল এবং তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মতি কেমো থেরাপি নিচ্ছিলেন। নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে আতিকুর রহমান সালুকে গেল ৩০ নভেম্বর নিউজার্সীর প্যাসিক সিটির একটি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

আতিকুর রহমান সালুর জন্ম টাঙ্গাইলে ১৯৪৮ সালে। নবম শ্রেণিতে পড়াকালে পুরো হাই স্কুলের জেনারেল ক্যাপ্টেন ও পরবর্তী মধ্য ষাট দশকে টাঙ্গাইল জেলার ঐতিহ্যবাহী করটিয়া কলেজ (বর্তমানে সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ) ছাত্র সংসদের এজিএস এবং সেখান থেকে গ্র্যাজুয়েশন করে তিনি। পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন ও পরবর্তী আইনে ডিগ্রী পান সালু। এর মাঝে ১৯৬২-১৯৬৯ সালের টাঙ্গাইলের প্রতিটি ছাত্র আন্দোলনে তথা ঢাকাসহ তৎকালীন পুরো পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুব বিরোধী ছাত্র-গণ আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান ও কারাবরণ করেন। ক্রমান্বয়ে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন টাঙ্গাইল মহুকুমা-তথা টাঙ্গাইল জেলার সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি পদ ও পরবর্তী অভিবক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য এবং পরবর্তী সংগঠনের (মেনন গ্রুপ) সাংগঠনিক সম্পাদক, পর্যায়ক্রমে পূর্ব বাংলা বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন তথা বাংলাদেশ বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির পদ অলংকৃত করেন সালু। ১৯৭০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত লক্ষ লোকের সমাবেশে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কায়েমের প্রস্তাব হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পড়েন সংগঠনের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান সালু। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতে অন্তরীণ আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি করে বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি নামে যে কমিটি গঠিত হয় তিনি ছিলেন সেই কমিটিরও ছিলেন সদস্য। নানা সময় পট পরিবর্তনের হাওয়াতেও আতিকুর রহমান সালু আদর্শচ্যুত হননি। ১৯৭৬ সালে ভাসানীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চে অংশ নেন ২০০৫ সালের ৪ মার্চ আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির উদ্যোগে উজানে ভারতের এক তরফা পানি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে ও আমাদের নদী পানির অধিকার রক্ষা ও আদায়ের জন্য কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীতে অনুষ্ঠিত লং মার্চেও অন্যদের সাথে নিয়ে নেতৃত্ব দেন। যেখানে পাঁচ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে।

তিনি এক দিকে কবি, গীতিকার, সুরকার, লেখক, অ্যাক্টিভিষ্ট ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৬০ এর দশক থেকে সমানতালে চলেছে তার কাব্য চর্চা। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘আনিকার জন্য কবিতা’। ‘অন্য রকম কবিতা’ আতিকুর রহমান সালুর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ।