ভার্জিনিয়া, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার ৩০৬০ উইলিয়াম ড্রাইভস ফেয়ারফ্যাক্সে এম্পায়ার হোম হেলথ সার্ভিস এর অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা রোববার (১৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লেখক, কবি ও সংগঠক সামছুদ্দীন মাহমুদের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মেজর (অব.) মনজুরুল হক, নজরুল ইসলাম, নওশের আলী, রফিকুল হক, আনিস আহমেদ, শামীম সেলিমুদ্দীন, খুরশিদ সাব্বীর, হাসান চৌধুরী, কবিরুল আলম, কচি খান, স্যাম রিয়া, আকতার হোসেন, মেজর (অব.) শাফায়াত আহমাদ, ফাতেমা সিদ্দীক, শায়লা মনজুর, মুশফিকা হক, শার্লিন সেলিম, আবু সেলিমুদ্দীন, তাবাস্সুম রহমান, সাহিনা আকতার, আফসা রহমান প্রমুখ।
আলোচকরা বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি নিরপেক্ষ ও বুদ্ধিভিত্তিক সংগঠনের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
মনজুরুল হক তার পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ‘একটি দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে ফ্যাসীবাদি হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু, সুষ্টু পরিকল্পনা ও লোকবলের অভাবে বর্তমান সরকার এ আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারছে না। অন্য দিকে, ভারতীয় আদপত্যবাদীচক্র ও তৎপর।’
এ অবস্থায় এ সরকারকে সঠিক কর্মপন্থা প্রণয়ন করার জন্য তিনি বেশ কিছু পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনে তাদের ত্যাগ বৃথা যেতে পারে না।’
আগামী প্রজন্মের এ শক্তিতে দেশ পরিচালনায় যে কোন সহায়তা করার জন্য এ ফোরাম প্রস্তুত বলে তিনি জানান।
নওশের আলী বলেন, ‘বর্তমান ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যমত্য হতে হবে। নাহলে দেশে এ আধিপত্যবাদ যে কোন অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে।’
রফিকুল হক বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ ধরনের একটি উদ্যোগের খুবই দরকার। আমরা যারা প্রবাসে বাস করি, আমাদের কন্ঠস্বর তুলে ধরতে হবে।’
আনিস আহমেদ বলেন, ‘আমাদের মার্কিন রাজনীতিবিদদের সাথে নিয়ে এ ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা করতে হবে। বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসনকে এ বিষয়ে সঠিক খবরা-খবর দিতে হবে।’
শামীম সেলিমুদ্দীন বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন কেবল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ছিল না, এ আন্দোলন ছিল ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও দীর্ঘ দিনের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এক দীর্ঘ সংগ্রাম। এ আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে।’
খুরশীদ সাব্বির বলেন, ‘এ প্রজন্ম হাসিনার মত ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করেছে। তাই, ভারতীয় আদিপত্যবাদিদের খেয়াল রাখতে হবে, তারা বাংলাদেশের উপর নজর দিলে কিভাবে তাদের কালো হাত ভেঙ্গে দিতে হয়।’
হাসান চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রথম ডিসি মেট্রো এরিয়ার এত বুদ্ধিজীবী ও প্রফেশনাল লোকজনের সমাগম দেখলাম; যারা নিরপেক্ষভাবে বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা করছে।’
তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখতে এ ধরনের একটি ফোরামের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
কচি খান এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমান সরকারের ভাল কাজের সহায়তা ও খারাপ কাজের সমালোচনা করা উচিত।’
আকতার হোসেন বলেন, ‘দেশে বর্তমান একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ফ্যাসিবাদ গেছে। কিন্তু, তাদের দোশররা এখনো দেশে বিরাজমান। এ দের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।’
শাফায়াত আহমাদ বলেন, ‘দেশ হাসিনা মাফিয়ার হাত থেকে মক্ত হয়েছে সত্য। কিন্তু, পুরাপুরি মুক্ত হয়নি। আমরা যারা প্রবাসে আছি, তারা এ সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে, যাতে তারা একটি সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারে এবং দেশ প্রয়োজনীয় সব সংস্কার সম্পাদন করতে পারে।’
সামছুদ্দীন মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জ্ঞানী গুণিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তারাও বিভিন্নভাবে এ সরকারকে সহায়তা করতে পারে। এ ধরনের প্লাটফর্মের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ও ভবিষ্যতে যে কোন গণতান্ত্রিক সরকারের সাথে এ ফোরাম কাজ করবে। ফ্যাসিবাদ, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এ ফোরাম সব সময় সক্রিয় থাকবে।’
খুব শীগগিরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের ও ২৪’-এর গণআন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
খুরশীদ সাব্বীরের পরিচালনায় বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশের গান ‘ও আমার দেশের মাটি’ সমবেত কন্ঠে গাওয়া হয়।