রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

শিরোনাম

বছর ঘুরে ফের এল পবিত্র ঈদ-উল-আযহা

বুধবার, জুন ২৮, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

আবছার উদ্দিন অলি: বছর ঘুরে ফের এল পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। সুখ, সৌহার্দ্য আর আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে এ উৎসব। সব ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মিলিত হওয়ার দিন এটি। ঈদুল আযহার আনন্দ অমলিন হোক। ধনী-দরিদ্র, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সব মুসলমান মিলেমিশে ঈদের আনন্দ সমভাগ করে নেন, পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ, অহংকার ভুলে খুশিমনে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করেন।

আমাদের চিন্তা ভাবনায়ও মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। আগামী ২৯ জুন, ১০ জিলহজ্ব বৃহস্পতিবার ঈদ-উল-আযহা। ঈদ-উল-আযহা মূলত: ধর্মীয় উৎসব হলেও বাহ্যিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের দিক থেকে এটি প্রায় ঈদুল ফিতরের অনুরূপ। ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল এ দিনেও থাকে আনন্দ উৎসব। ঈদ-উল-আযহা মানে শুধুমাত্র গরু-ছাগলের মাংস ভক্ষণ নয়, ত্যাগের আদর্শে উজ্জীবিত হওয়ারও সময়। তাই, কোরবানীর মূল দর্শন থেকে সরে গিয়ে ঈদ-উল-আযহাকে অর্থ ব্যয়ের প্রতিযোগিতায় না নেয়াই ভাল।

মসলার বাজার উত্তাপ ছড়াচ্ছে। কাচাঁ মরিচ, আদা ও রসুনের দামও বাড়তি। কোরবানীর সংখ্যাও এবার কমে এসেছে। মানুষের হাতে টাকা নেই, নেই আয়-রোজগার। ঈদ মানে খুশী। এক অনাবিল আনন্দ বছরে অন্ততঃ এ একটা দিন সবাই মিলে উপভোগ করে খাওয়া-দাওয়া ও বেড়ানোর নির্মল আনন্দ। এবারের ঈদ-উল-আযহাও চিরায়ত আনন্দ উৎসবের আমেজে থাকবে পরিপূর্ণ। ঈদ-উল-আযহার কোরবানিকে ঘিরে জমে উঠেছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পশুর হাট সাগরিকা ও বিবিরহাট গরুর বাজার। ইতোমধ্যে উত্তরবঙ্গ থেকেও গরু এনেছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার খামার থেকেও গরু আনা হয়েছে বিক্রির জন্য। মাঝারি ও ছোট সাইজের গরু বিক্রি বেশি হচ্ছে। যারা বাজারে না গিয়ে গরু কিনতে চাইছেন, তারা ঝুঁকেছেন এগ্রো ফার্মে।

শিকলবাহায় রাজ এগ্রোতে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সাইজের গরু। ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১২ লাখ টাকারও বেশি দামের গরু পাওয়া যাচ্ছে। গরুর দাম বেশি, হাটে গরু আছে ক্রেতা নেই। মেসি, পরিমনি, রাজাবাবু, কালামানিক, চট্টলার কিং সাকিব খান, লাল মিয়া বিভিন্ন নামে গরু এসেছে হাটে। এভাবে সিটির অসংখ্য খামারে ছোট-বড় গরু ঈদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ও পর্যাপ্ত পরিমাণ গরু রয়েছে। দামও রয়েছে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে।

দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে চট্টগ্রামে ঈদ-উল-আযহার উৎসব পালিত হয় একটু ভিন্নভাবে। বিশেষ করে সিটি ও বর্তমানে গ্রামেও কোরবানীর পশু কেনা নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা পড়ে যায়। পশুর সাইজ (আকার) নিয়েই মূলত: এ প্রতিযোগিতা অর্থাৎ বিত্তবানরা কে কত বড় পশু কিনল? কে কত বেশী দাম দিয়ে কিনল? এসব নিয়ে সিটির বিভিন্ন পাড়ায়-পাড়ায়ও চলে আলাপ। এ ধরনের প্রতিযোগিতা অনাকাঙ্খিত ও বাড়াবাড়ি। এতে হয় কি কোরবানীর বড় বাজেটের জন্য অনেক বড় রকম দুর্নীতিও করেন। দুর্নীতি করে কোরবানীর পশুর সাইজ বড় করার কি দরকার? বেশী করে মাংস খাওয়ার জন্য? যারা সারা জীবনই মাংস খাওয়া থেকে বঞ্চিত তাদের কথা ভুলে গেলে চলবে না।

ইতোমধ্যে শহর ছেড়েছেন অনেকেই, ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন চালু হয়েছে। চট্টগ্রামে আশংকাজনক হারে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। তাই, আমদেরকে সচেতন হতে হবে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে আশেপাশের পরিবেশ। নিরাপদে ঈদ যাত্রা হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা। ঈদ মোবারক।

লেখক: সাংবাদিক ও গীতিকার, চট্টগ্রাম