রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

শিরোনাম

বড় বাজেট দিয়ে সরকারের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোন কারণ নেই

শুক্রবার, জুন ২, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) সভাপতি কমরেড এমএ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাহিদুর রহমান বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘বিশাল বাজেট ধনিক লুটেরাদের সুবিধার্থে, এতে দরিদ্র কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের স্বার্থ রক্ষা হয়নি। এ বাজেটে ভ্যাট-ট্যাক্সের বোঝা তো জনগণেরই বহন করতে হবে। বড় বাজেট দিয়ে সরকারের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোন কারণ নেই।’

শুক্রবার (২ জুন) গণ মাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে নেতারা আরো বলেন, ‘প্রতি বছরই বাজেটের আকার বড় করা হয়; এবারের বাজেটও তার ব্যতিক্রম নয়। সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার এবারের বাজেটে; যা জিডিপির ১৫ শতাংশ। সরকার মনে করছে, বাজেটের পাঁছ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আয় আসবে। এর মধ্য চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আসবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে বাকি ৭০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের প্রস্তাব করা হয়েছে। দুই লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ঘাটতি থাকছে; যার পরিমাণ জিডিপির পাঁচ দশমিক দুই শতাংশ।’

তারা আরো বলেন, ‘ঘাটতি পূরণ (অর্থসংস্থান) করা হবে দুইভাবে‘ দৈশিক ঋণ ও অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ে। কারণ, খরচ তো সরকারকে করতেই হবে। বৈদেশিক ঋণ নেয়া হবে মোট এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা ও অভ্যন্তরীণ ঋণ নেয়া হবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেয়া হবে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, আর সঞ্চয়পত্র বিক্রিসহ ব্যাংক বহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার কোটি টাকা।’

সিপিবির (এম) নেতারা আরো বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থ বছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ছয় হাজার কোটি টাকা। গেল অর্থ বছরে ব্যাংক ঋণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা; যা বর্তমান অর্থ বছরের এক লাখ ছয় হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার তুলনায় ২৬ হাজার কোটি বা ২৪ শতাংশ বেশি। এবারো ঘাটতি থাকবে নতুন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।’

নেতারা বলেন বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা; যা গেল বাজেটে ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। চিকিৎসা খাতের বেহাল দশা চিকিৎসা ব্যায়ের ৭৫ শতাংশ জনগণের নিজেদের পকেট থেকে ব্যয় হয়; তারপরও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ল না উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে; যা গেল বাজেটে ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে; যা গেল অর্থ বছরে ছিল ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য দশ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে, যা গেল বছরে ছিল নয় হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দাঁড়াল ১১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। কৃষি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা; যা গত বছরে ৩৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। মোট বাজেটের চার দশমিক ৬৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য, কৃষি ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল। ২০ লাখ কর্ম প্রত্যাশী প্রতি বছর কর্মসংস্থানের জন্য শ্রম বাজারে আসে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ শ্রমিকের অভাব আছে, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাজেটের বরাদ্দ নেই।