শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বন্যার্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ২০ হাজার ডলার দিল চীন

রবিবার, আগস্ট ২৫, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: বাংলাদেশে বন্যার্তদের সহায়তার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ২০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছে চীন। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন দূতাবাসের পক্ষ থেকে চেক হস্তান্তর করেন। এ উপলক্ষে রোববর (২৫ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইয়াও ওয়েন প্রধান উপদেষ্টার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সবুজ অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে চীনের কিছু সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বেইজিং ও ঢাকার মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন ও চীনের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘চীন সোলার প্যানেলের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তবে, রপ্তানি বাজারে ক্রমবর্ধমান বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘চীনা উৎপাদনকারীরা তাদের সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে পারেন। এটি বাংলাদেশকে রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ ও সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তরে সহায়তা করবে।’

তিনি উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে চীনে বাংলাদেশী পণ্যের আমদানি সম্প্রসারণের আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা উভয় দেশের মধ্যে প্রযুক্তি স্থানান্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও কৃষিখাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বানও জানান।

বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করায় চীনা নেতৃবন্দ ও জনগণের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বেইজিং ঢাকার সাথে কাজ করতে প্রস্তুত এবং আমি আশাবাদী যে, ইউনূসের নেতৃত্বে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ সফল হবে।’

তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরো উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ হবে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও বাংলাদেশের কৌশলগত এবং সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উচ্চ শিখরে রয়েছে এবং উভয় দেশ আগামী বছর তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বছর উদযাপন করবে।’

ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা কবলিত অঞ্চলে অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজে পেতে চীনা সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।’

বৈঠকে ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, চীন বাংলাদেশে বসবাসরত দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

প্রধান উপদেষ্টা চীনে তার স্মৃতি স্মরণ বলেন, ‘চীনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনুস সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে এবং বহু তরুণ ত্রি-জিরো ক্লাব গঠন করেছে। এসব ক্লাবের সদস্যরা দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তিনি দুই দেশের তরুণ সম্প্রদায় ও জনগণের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বৈঠকে চীনের রাষ্ট্রদূত ইউনূসকে তার সুবিধাজনক সময়মত চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটা সন্ধিক্ষণ পার করছে। তবে, বাংলাদেশের জনগণ এ চ্যলেঞ্জ পার করতে সক্ষম হবে।’

রাষ্ট্রদূ বলেন, ‘চীনা রেড ক্রসও বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এক লাখ মার্কিন ডলারের মানবিক সহায়তা দেবে।’