লাপাজ, বলিভিয়া: ব্রাজিলে নিযুক্ত দক্ষিণ আমেরিকায় বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা লাপাজে অবস্থিত গ্র্যান্ড পিপলস হলে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট লুইস আলবার্তো আর্সে কাতাকোরার কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা ব্রাসিলিয়াস্থ দূতাবাসে নিযুক্ত থেকে অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে বলিভিয়ার দায়িত্ব পালন করবেন।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ পরিচয়পত্র পেশের পর প্রেসিডেন্ট আলবার্তোর সাথে রাষ্ট্রদূতের এক সংক্ষিপ্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচন, গণহত্যা, গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ ও ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান প্রেসিডেন্ট আলবার্তোকে অবহিত করেন।
ল্যাটিন আমেরিকার কিংবদন্তী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সাথে বঙ্গবন্ধুর বন্ধুত্ব ও ফিদেল কাস্ত্রো কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর হিমালয়সম তুলনা জেনে আলবার্তো আবেগতাড়িত হন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের বিষয়ে অবগত হয়ে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন।
রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে শেখ হাসিনার বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত এ সময় জাতিসংঘের বিভিন্ন উন্নয়ন ফোরামে বাংলাদেশ ও বলিভিয়ার সহযোগিতা তুলে ধরেন।
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা জানান। এ সময় বলিভিয়ার ভাইস-মিনিষ্টার ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স এরউইন ফ্রেডি মামানি মাচাকা উপস্থিত ছিলেন।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট অভিভূত হন। তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও বলিভিয়া উন্নয়ন-সহযোগী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।’
রাষ্ট্রদূত তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন ও অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ সফরের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের ঘনিষ্ট অংশীদার বলিভিয়ার সাথে ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ও রাষ্ট্রদূত উভয়ই সম্মত হন। বিশেষ করে ওষুধ রপ্তানি, গার্মেন্টস ও নীটওয়্যার, প্লাস্টিক ও চামড়াজাত পণ্যে সম্ভবনাময় বলিভিয়ার বাজার সম্প্রসারণে রাষ্ট্রদূত কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। দ্বিপাক্ষিক আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টকে শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও বাংলাদেশের লোকশিল্পের নিদর্শন হিসেবে নকশী কাঁথা উপহার দেন।