রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বাংলাদেশ-ভুটান ট্রানজিট চুক্তি ও প্রোটোকল সই

বুধবার, মার্চ ২২, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

থিম্পু, ভুটান: বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ব্যবসায়-বাণিজ্য সহজতর করার লক্ষ্যে ‘এগ্রিমেন্ট অন দ্যা মুভমেন্ট অফ ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট অ্যান্ড প্রোটোকল’ সই হয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি ও ভুটানের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী কর্মা দর্জি চুক্তিতে সই করেন।

বুধবার (২২ মার্চ) ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এ চুক্তি সই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে ভুটানের শিল্প বাণিজ্য কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব দাশ তাশি ওমাং এবং শক্তি ও নবায়নযোগ্য সম্পদ বিষয়ক সচিব দাশ কর্মা শেরিং, ভুটান চেম্বার অব ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি ও ভুটানের বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে টিপু মুনশি বলেন, ‘যুগান্তকারী এ চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে দুই দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য আরো সহজতর হওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে।’

স্বাক্ষরিত চুক্তি দেশের জন্য কুটনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংযোগ ও কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্য মন্ত্রী আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আন্ত:যোগাযোগ বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক ভ্যালু চেইন সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে চায়। এর অংশ হিসেবে চারিদিকে স্থলভাগ বেষ্টিত ভুটানকে বাংলাদেশ ট্রানজিট চুক্তির আওতায় বিমান, রেল, স্থল, নৌবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে।’

এ চুক্তির ফলে উভয় দেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক যোগাযোগে ব্যাপক প্রসার ঘটবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে ভুটানের পণ্য রপ্তানি ও আমদানি করলে বাংলাদেশ বিভিন্ন ফি ও চার্জ পাবে। এছাড়া, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটবে। ট্রানজিট এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সমুন্দ্র বন্দরগুলো অধিকতর কর্মক্ষম হবে ও রাজস্ব আয় বাড়বে। অধিকন্ত কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বন্দরগুলোর সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনবে।’

বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে তিনি গর্বিত।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তির প্রাক্কালে ১৯৭১ এর ৬ ডিসেম্বর বালাদেশকে সর্ব প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও বাংলাদেশ ভুটানের নিবিড় বন্ধুত্বকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দ্বিপাক্ষিক এ সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতে আরো সম্প্রসারিত ও শক্তিশালী করতে উভয় রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে অর্থ-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং যোগাযোগ ও অবকাঠামোসহ সব খাতে অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। যার ফলে, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি দেশে রুপান্তরিত হয়েছে, পরিচিতি ‍পেয়েছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।’

এ সময় বিগত বছরগুলির ন্যায় সব আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশকে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখা ছাড়াও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন ডলারের যাত্রায় ভুটানকে উন্নয়ন অংশীদার হওয়ার আহবান জানান তিনি।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানের পর ভুটানের মন্ত্রী, সচিব ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে টিপু মুনশী কৃষি খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বিশেষ করে মাশরুমসহ কৃষি পণ্যের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ের গুরুত্ব আরোপ করেন।

বলে রাখা ভাল, তিন দফা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে ওই চুক্তি এবং এর আওতায় প্রোটোকল চুড়ান্ত করা হয়। গত ১৩ মার্চ তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। এর আগে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিকেকে সম্পাদিত চুক্তি ও প্রোটোকল অধিকতর কার্যকর করবে। স্বাক্ষরিত চুক্তিটি উভয় দেশ কর্তৃক রেটিফিকেশনের পরে কার্যকর হবে।