সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫

শিরোনাম

বাংলাদেশ সোসাইটির উদ্যোগে নিউইয়র্কে ‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’ ১৩ এপ্রিল

সোমবার, মার্চ ৩, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: বাংলাদেশ সোসাইটি এবার নিউইয়র্কে ‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী ১৩ এপ্রিল এই প্যারেড অনুষ্টিত হবে। এতে ১৫-২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীর সমাবেশ ও প্রবাসের অর্ধ শতাধিক সংগঠন অংশ নেবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা। প্যারেডে গ্র্যান্ড মার্শাল থাকবেন ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ গ্রুপের কর্ণধার শাহ নেওয়াজ। আর প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত হয়েছেন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ গিয়াস আহমেদ।

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে ২৬ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ফাহাদ সোলায়মান, সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান সভাপতি এম আজিজ, সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সহ সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, ব্রঙ্কসের কমিউনিটি বোর্ড চেয়ার এন মজুমদার, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট কাজী আজম, ব্যবসায়ী আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, বাংলাদেশী পুলিশ এসোসিয়েশনের (বাপা)সভাপতি এরশাদুল সিদ্দিক, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট নাসরীন আহমেদ, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ইউএসএর আতোয়ারুল আলম ও আশরাফ আহমেদ, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর নূরুল আজিম।

সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন ফাহাদ সোলায়মান ও সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা জে মোল্লা সানি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্যরেড কমিটির চেয়ারম্যান হচ্ছেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম ও আহ্বায়ক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী এবং সদস্য সচিব ফাহাদ সোলায়মান। বাংলাদেশ সোসাইটির আয়োজনে প্রবাসের অর্ধ শতাধিক সংগঠন প্যারেডে অংশ নেবে। সংগঠনগুলোর সাথে মতবিনিময় হয়েছে। সবার মতামতের ভিত্তিতে প্যারেডে গ্র্যান্ড মার্শাল নির্বাচিত হয়েছেন শাহ নেওয়াজ ও প্রধান উপদেষ্টা থাকবেন গিয়াস আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ‘বাংলাদেশ সোসাইটি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সব বাংলাদেশীর প্রাণের সংগঠন, মর্যাদার সংগঠন। প্রবাসী বাংলাদেশীসহ প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের মান-মর্যাদা রক্ষা করা সোসাইটির দায়িত্ব। তাই, আমরা সবাইকে নিয়ে ব্যাপক আয়োজনে বাংলাদেশ ডে প্যারেড করতে চাই, কমিউনিটিকে সুসংহত করতে চাই এবং সবার সহযোগিতা চাই।’

তিনি বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।

মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘প্রবাসে বাংলাদেশী কমিউনিটিকে বৃহৎ আকারে তুলে ধরার পাশপাশি দেশীয় শিল্প সংস্কৃতিকে মূলধারার সামনে তুলে ধরাই সোসাইটির প্যারেড আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।’

প্যারেড সফল করতে তিনি সব সংগঠন ও প্রবাসীদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

ফাহাদ সোলায়মান বলেন, ‘প্যারেডের জন্য ইতিমধ্যেই সিটি প্রশাাসনের অনুমতি নেয়া হয়েছে। প্যারেডে অংশ নেয়ার জন্য এ পর্যন্ত ১০টি প্রতিষ্ঠান রেজিষ্ট্রেশন করেছে। সকাল ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত প্যারেডের কর্মসূচী চলবে। মূল প্যারেড শুরু হবে বেলা ১১টায়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সোসাইটির ট্রাষ্টি বোর্ড চেয়ারম্যান এম আজিজ শেষ পর্যায়ে ফ্লোর নিয়ে টেবিল থাপড়িয়ে অভিযোগ তুলে বলেন, সোসাাইটির আজকের অবস্থানে অনেক প্রবাসীর অবদান রয়েছে। সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ড রয়েছে। এই বোর্ডের সাথে আলোচনা না করেই প্যারেড অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে এবং কিভাবে প্যারেডের গ্র্যান্ড মার্শাল ও প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত হয়েছে তা জানতে চান।

তিনি বলেন, ‘আমি দুই দুই বার সোসাইিটির প্রেসিডেন্ট ছিলাম, ১২ বছর ধরে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আছি, সোসাইটি ভবন আমি রক্ষা করেছি। সোসাইটির অনেক অভিভাবক রয়েছে। তারা কোথায়?’

এক পর্যায়ে তিনি সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হু আর ইউ?’

এম আজিজের তীব্র ক্ষোভের প্রত্যুত্তরে আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ‘আপনি টেবিল থাপড়িয়ে কথা বলবেন না, তাহলে আরো পাঁচজনও একইভাবে টেবিল থাপড়িয়ে কথা বলতে পারে।’

এম আজিজের প্রশ্ন সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্ন নয়, এটা সোসাইটির অফিসে আলোচনার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সবার সহযোগিতা চাই, সবাইকে আমরা সম্মান-মর্যাদা দিতে চাই।’

প্রসঙ্গত, সোসাইটির বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সোসাইটির কার্যক্রম পরিচালনায় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সোসাইটির ‘তথাকথিত’ ট্রাস্টি বোর্ডের কোন ভুমিকা নেই। কেবল কার্যকরী কমিটি ২৫ হাজার ডলার বা তার চেয়ে বেশী পরিমাণ কোন অর্থ ব্যয় করার পূর্বে ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মতি গ্রহণের বিধান রয়েছে। যদিও এম আজিজ যখন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন তার পুর্ববর্তী নার্গিস আহমেদ-জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বাধীন কমিটির ভবন কেনার জন্য রেখে যাওয়া লক্ষাধিক ডলার দিয়ে একক সিদ্ধন্তে কবর কেনার সময় সেসময়য়ের বোর্ড অফ ট্রাস্টিকে অবগত করেন নি। এমন কি মাস কয়েক আগে সদ্য বিদায় নেওয়া রব মিয়া ও রুহুল আমিন সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কমিটি যখন কবর কেনার জন্য আড়াই লক্ষ ডলার ব্যয় করে তখনও ‘ট্রাস্টি বোর্ডের’ সম্মতি গ্রহণ করা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে অপ্রীতিকর ঘটনার জের হিসাবে বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে কয়েক হাজার সদস্যের ভোটে নির্বাচিত সোসাইটির কার্যকরী কমিটির সদস্যদের উপর কর্তৃত্ব আর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মঞ্চে জায়গা করে দেওয়ার জন্য কার্যকরী কমিটির ১৯ জনের ভোটে নির্বাচিত তথাকথিত বোর্ড অফ ট্রাস্টির প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে কমিউনিটিতে। এছাড়া একজন ব্যক্তি কিভাবে, কোন যোগ্যতায় একটানা ১২ বছর বোর্ড অফ ট্রাস্টের সদস্য ও চেয়ারম্যান থাকতে পারেন, সে প্রশ্নও উঠেছে।