বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বায়ু দূষণ বন্ধে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা নেই

শুক্রবার, মার্চ ৩, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: সবুজ আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে ঢাকা শহরের বায়ু দূষণ বন্ধে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

এতে সবুজ আন্দোলনের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার বলেন, ‘বায়ু দূষণ ক্রমাগত ঢাকাসহ পুরো দেশে অক্ষমতা ও মৃত্যুর ঝুঁকির শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে। দূষিত বায়ুর কারণে হৃদরোগ, দীর্ঘ স্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ফুসফুসের সংক্রমণ ও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকার বাতাসে সবচেয়ে বিপজ্জনক পিএম দুই দশমিক পাঁচ; যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ করা পরিমাণের চেয়ে ১৬ গুণ বেশি। সর্বশেষ কয়েক মাসে ঢাকা শহর বার বার পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে দেশি ও বিদেশি গণ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। বায়ু দূষণ বন্ধে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা নেই। এ জন্য দরকারকে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বায়ু দূষণ রোধে কোন উদ্যোগ না নিলে পরিবেশ অধিদপ্তর ঘেরাও করা হবে।’

অন্য বক্তারা বলেন, ‘বর্তমান সরকার উন্নয়নের কথা বললেও পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে অত্যন্ত উদাসীন। বর্তমান ঢাকা শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সরকারের যে সব উন্নয়ন প্রকল্প গুলো চলছে; সেগুলো পরিবেশ বিপর্যয় করছে সব থেকে বেশি।’

অবস্থান কর্মসূচিতে সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে বায়ু দূষণ বন্ধে কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এগুলো হল- ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকার চারপাশে শহর রক্ষা বাঁধে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলা ও নদীর ব্যবহার বাড়াতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া; রাস্তা ঝাড়ু দেয়ার জন্য ভ্যাকুয়াম সুইপিং ট্রাক ব্যবহার ও শহরের বড় রাস্তা পরিষ্কার রাখতে দিনে দুই বার পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করা; দশ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আলাদা কমিশন গঠন এবং অর্থ বরাদ্দ দেয়া; প্রত্যেকটি আবাসন প্রকল্পে ২৫ ভাগ সবুজায়ন নিশ্চিত করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান চালানো ও সব বাড়ির ছাদে সবুজায়ন বাধ্যতামূলক করা; সব পুরাতন যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা ও অনিয়ন্ত্রিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করা; ঢাকার চারপাশে অবস্থিত আন্তঃসংযোগ বায়ু দূষণ রোধে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সব ইটভাটাকে নিষিদ্ধ করে পরিবেশবান্ধব ইটভাটা চালুর উদ্যোগ নেয়া ও উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা; শহরের মধ্যে অবস্থিত সব প্রকার গার্মেন্টস শিল্প ও কেমিকেলের বর্জ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে স্থানান্তর করা ও মানব সৃষ্ট বর্জ্য রাখার জন্য ঢাকার চারপাশে জায়গা অধিগ্রহণ করা; সিটি করপোশনের সব ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে মাসে চার বার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য করা ও তাদেরকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে বাধ্য করা; পরিবেশ অধিদপ্তরে পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগের ব্যবস্থা করা ও পরিছন্নতা কর্মীদের জীবন মান উন্নয়নে স্বাস্থ্য বীমা চালু, বেতন বৃদ্ধি, তাদের সন্তানদের সুশিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা; পরিবেশ ও বন অধিদপ্তর, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করে উল্লেখযোগ্য সংগঠনকে নিয়ে স্টেক হোল্ডার বডি তৈরি করা।

সবুজ আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য বাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সাবেক মন্ত্রী নাজিমুদ্দিন আল আজাদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান আকাশ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, এনডিএমের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান হিরা, গণ সমাজ পার্টির চেয়ারম্যান সরদার সামস আল মামুন, প্রত্যাশার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন, সবুজ আন্দোলনের পরিচালক নাদিয়া নূর তনু, অভিনেতা উদয় খান, শেখ এনামুল হক রনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন আহমেদ জিয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রবিউল ইসলাম, সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক নেতা সমীরণ রায়, সহ অর্থ সম্পাদক সালমা আক্তার শান্তা, কেন্দ্রীয় সদস্য খালিদ সাইফুল্লাহ।