রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বিএনপিকে মোকাবিলা করতে যুবলীগ একাই যথেষ্ট

মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৮, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ লাগবে না, যুবলীগ একাই বিএনপিকে মোকাবিলা করতে যথেষ্ট। আমরা এখনো মোকাবিলার ঘোষণা দেই নি। আমরা যদি মোকাবিলার ঘোষণা দিয়ে নামি, তাহলে তারা পালানোর পথ পাবে না।’

বঙ্গবন্ধুর শহীদ কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘যুবলীগ আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড। তাই যুবলীগের নেতাকর্মীদের বলব, সতর্ক দৃষ্টি রাখেবেন, যখন নির্দেশ আসবে তখনই জনগনকে নিয়ে এ সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে হবে।’

যুবলীগ সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে সাংসদ সুবর্ণা মুস্তাফা বিশেষ অতিথি, শেখ রাসেলের চাচাতো ভাই শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল অতিথি হিসেবে, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। ২০১৩-১৪-১৫ সালে এমন বিশৃঙ্খলা করেছিল যে, গাছও তারা উপড়ে ফেলেছিল। মানুষের ওপর তো বটেই, গাড়ি, গবাদিপশু এমন কি মুরগির ওপরও তারা হামলা চালিয়েছিল। তাতে সরকার পতন হয় নি। শেখ হাসিনার সরকার সেই আন্দোলন, নৈরাজ্য মোকাবিলা করেছে। আমরা জানি, কিভাবে সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে হবে, যখন মোকাবিলা করার প্রয়োজন হবে আমরা থাকব।’

আওয়ামী লীগ নেতা হাছান তার বক্তৃতার শুরুতেই বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আজ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট যখন শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়, তখন তার বয়স ছিল মাত্র দশ বছর। যখন ৩২ নম্বরে একে একে সবাইকে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন তিনি শেখ রাসেল ৩২ নম্বরের কর্মচারি রমা, যিনি এখনো বেঁচে আছেন, তার হাত ধরে দাঁড়িয়েছিল। শেখ রাসেল যখন বলছে, আমি মায়ের কাছে যাব, তখন তাকে ছিনিয়ে নিয়ে মায়ের কাছে নেয়ার কথা বলে ঘাতকরা সে দিন শেখ রাসেলের মত ছোট্ট শিশুকে হত্যা করেছিল।’

হাছান বলেন, ‘যুবলীগ প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার সহধর্মিণী বেগম আরজু মনির লাশ যখন মেঝেতে পড়েছিল, ফজলে শামস পরশের বয়স তখন পাঁচ বছর ও তাপসের বয়স সাড়ে তিন বছর। পরশ মা-বাবা হারানো কিছুটা বুঝতে পারলেও তাপস যিনি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, মায়ের লাশ ধরে ধরে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে বলছিল, মা ওঠ ওঠ। মা-বাবা যে তার চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেছে, তা সে বুঝতে পারে নি। সে দিন মানবতার বিরুদ্ধে এত নির্মম অপরাধ সংগঠিত হয়েছিল। আর সেই অপরাধের প্রধান কুশীলব ছিল খন্দকার মুশতাক, আর তার প্রধান সহযোগী ছিল খুনী জিয়াউর রহমান।’

‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর খুনিদের বিচার বন্ধ করে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি হল, যখন জিয়াউর রহমান প্রধান সেনাপ্রতি, আর জিয়া ক্ষমতা দখল করার পর পার্লামেন্টে প্রথম অধিবেশনে তার নির্দেশে খুনিদের বাঁচাতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করা হল।’ বর্ণনা করেন তিনি।

আহত বিস্ময়ে তথ্য মন্ত্রী বলেন, ‘একজন ডাকাতও যদি খুন হয়, একজন খুনীকেও যদি কেউ খুন করে তারপরও সেটার বিচার হয়। কিন্তু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, যিনি জাতিকে শ্লোগান শিখিয়েছেন- ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’, যে নেতা হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো বাঙালিকে সেই শ্লোগান শিখিয়ে এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে পাঁচ হাজার বছরের বাঙালি জাতির ইতিহাসে বাঙালির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, তার হত্যাকান্ডের বিচার হবে না! শেখ রাসেলের হত্যার বিচার হবে না, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের হত্যার বিচার হবে না, শেখ কামাল, শেখ জামালের, তার নববধূকে হত্যাকান্ডের বিচার হবে না! এভাবে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিল জিয়াউর রহমান আর আজকে তার তৈরি দল বিএনপি মানবাধিকারের কথা বলে!’

সভায় শেখ রাসেল স্মরণে মঞ্চপর্দায় গান ও আবৃত্তি সম্প্রচার অনুষ্ঠানকে আবেগঘন রূপ দেয়।