মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বিএনপির উদ্দেশ্যে বললেন হাছান মাহমুদ ‘যেমন নেত্রী তেমন তার সভাসদ’

শনিবার, জুন ২৯, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত দিয়েই অর্জিত হয়েছে। ৭৫ বছরের কন্টকাকীর্ণ পথ চলায় আওয়ামী লীগ সব সময় অগণতান্ত্রিক ও অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে ও তাদের চক্ষুশূল হয়েছে।’

শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে সিটির জামালখানস্থ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ‘গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৫ বছর উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চট্টগ্রাম ৭ আসনের সাংসদ হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খাঁন মার্শাল ল’ জারির পর বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। স্বাধীনতার পরও জিয়াউর রহমান ও এরশাদ দুই সামরিক স্বৈরশাসকই আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে।’

২০০৭ সালেও ভিন্ন খোলসে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসন চলেছে উল্লেখ করেন হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালে সমাজে বুদ্ধিজীবী পরিচয় দেয়া কিছু ব্যক্তিকে ভাড়া করে সামনে দিয়ে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসনই চালু করা হয়েছিল। সেই সময় দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ বিএনপির দুর্নীতি আর দুঃশাসনের অভিযোগ তুলে যেই শাসক এসেছিল, তারা তো প্রথমেই খালেদা জিয়াকেই গ্রেফতার করার কথা। কিন্তু, তারা সেটি না করে প্রথমে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করেছে। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা সব সময় অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী শক্তির চক্ষুশূল ছিল।’

এ সময় বিএনপির সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কিছু সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, আর কিছু নবায়ন করা হয়েছে, কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় নাই। আর সব সমঝোতা স্মারক দেশের স্বার্থেই করা হয়েছে। অথচ বিএনপি নেতারা গলা ফাটিয়ে বলে যাচ্ছেন চুক্তি সই হয়েছে। মির্জা ফখরুল সাহেব নাকি ঢাকা কলেজে পড়াতেন, বিএনপির আরো কিছু নেতাসহ মঈন খানও শিক্ষিত। চুক্তি আর সমঝোতা স্মারকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে না পারা বিএনপির শিক্ষিত নেতারা কেন অশিক্ষিতের মত কথা বলছেন, সেটি আমার বোধগম্য নয়।’

হাছান মাহুমদ বলেন, ‘আসলে যাদের নেত্রী বলেছিলেন, সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্ত হলে দেশের সব ‘সিক্রেসি আউট’ হয়ে যাবে, তারা কানেক্টিভিটির মর্ম বোঝার কথা নয়। যেমন নেত্রী তেমন তার সভাসদ, সেজন্যই তারা এসব আবোল-তাবোল কথা বলছেন, আর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। কোন কোন পীর সাহেবও দেখছি লাফাচ্ছেন। অথচ গাজায় যেভাবে মানুষ খুন করা হয়েছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে, প্রায় ৩৮ হাজার নিরীহ মানুষকে খুন করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে লাফাতে দেখি না। বিএনপি আর জামাতও এ নিয়ে একটি শব্দ বলেনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের বুকের উপর দিয়ে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি সই করেছি, ভুটানের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা চলছে। এ অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বার্থেই সেই কানেক্টিভিটিকে আমরা আরো বাড়াতে চাই, নেপাল ও ভুটানকেও যুক্ত করতে চাই। কিন্তু, বিএনপি সেটি নিয়ে বিভ্রান্তি চড়াচ্ছে।’

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য দেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মঈনুদ্দীন, আবুল কালাম আজাদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, সদস্য ইফতেখার হোসেন বাবুল, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, সরোয়ার শামীম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সৈয়দা রিফাত আক্তার নিশু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন রিয়াজ, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা রত্না, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম।